বৃহস্পতিবার কি আবার নিজাম প্যালেসে সিবিআই? ফাইল চিত্র।
বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’ তাপস মণ্ডলকে আবার ডেকে পাঠাল সিবিআই। বুধবারই তাঁকে নিজাম প্যালেসে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। জেরায় এক যুব তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে কোটি কোটি টাকা নেওয়ার অভিযোগও এনেছিলেন তাপস। বলেছিলেন কিছু নথি দিয়েছেন। পরে আরও নথি দিতে পারেন। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার আবার তাপসকে তলব করা হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। অনুমান করা হচ্ছে, নিয়োগ সংক্রান্ত যে সমস্ত দাবি তিনি সিবিআইয়ের কাছে করেছেন, সেই সংক্রান্ত নথি নিয়ে সিবিআই দফতরে আসতে পারেন তাপস।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সম্প্রতি তাপসকে বেশ কয়েক বার ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করল সিবিআই। এই সংক্রান্ত ইডির মামলায় অভিযুক্ত হিসাবে নাম রয়েছে তাপসের। সিবিআইয়ের পাশাপাশি ইডিও তাপসকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। টেটের প্রশিক্ষণের ডিগ্রি, ডিএলএডের কলেজের থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাপসের বিরুদ্ধে। আবার এই সমস্ত কলেজে নিয়ম এড়িয়ে অফলাইনে ভর্তির জন্য ছাত্রছাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এই ঘটনার তদন্তে নেমে ইডি বিধায়ক মানিকের পাশাপাশি তাপসেরও নাম জানতে পারে। যিনি নিজে ডিএলএড কলেজের অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম প্রধান পদে ছিলেন, এমনকি তাঁর নিজের বেশ কয়েকটি বেসরকারি কলেজও রয়েছে।
বুধবার এই তাপসই সিবিআইয়ের কাছে দাবি করেন, হুগলির এক যুব তৃণমূল নেতা বহু ছাত্র-ছাত্রীর থেকে নানা অজুহাতে প্রায় সাড়ে ১৯ কোটি টাকা তুলেছেন। তাপস বলেন, ‘‘বহু ছাত্র-ছাত্রীর থেকে জানতে পেরেছি, ওঁরা তৃণমূল নেতাকে টাকা দিয়েছেন। সেটির একটি হিসাব আমি সিবিআইকে দিয়েছিলাম। আজ কিছু নথি দিয়ে এলাম। সব মিলিয়ে ১৯ কোটি ৪৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।’’ যদিও ওই টাকা তৃণমূল নেতা কাকে বা কোথায় পাঠিয়েছেন, সে ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেননি তাপস। এমনকি, ওই টাকা কী অজুহাতে নেওয়া হয়েছিল— চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতির জন্য, না কি টেট প্রশিক্ষণের ডিগ্রির জন্য— তা-ও স্পষ্ট করেননি তাপস। এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য, টেটের প্রশিক্ষণ কলেজে মোটা টাকার বিনিময়ে ভর্তির তারিখ পেরিয়ে যাওয়ার পরও ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি নেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল মানিক-সহ তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে।
তৃণমূলের ওই যুবনেতা অবশ্য তাপসের দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘আমরা সকলেই জানি, ইডি তাদের তদন্ত রিপোর্টে কী দাবি করেছে। কী ভাবে তাপস মণ্ডল মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে হাত মিলিয়ে একটি ষড়যন্ত্রকে কেলেঙ্কারির রূপ দিয়েছেন। এমনকি, ইডি আদালতেও জানিয়েছে যে, তাপস মণ্ডলকে ছাড়া একা মানিক ভট্টাচার্যের পক্ষে এ রকম কেলেঙ্কারি করা এক প্রকার অসম্ভব। সেই ব্যক্তির দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।”