আদালতের পথে তাপস মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র।
তিনি টাকা নেননি, টাকা ‘ডিম্যান্ড’ করেছিলেন— সোমবার আদালতে ঢোকার মুখে এমনই জানিয়ে গেলেন সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়া তাপস মণ্ডল। কিন্তু তার পরও কেন তাঁকে গ্রেফতার করা হল? এ প্রশ্নের জবাবে তাপসের উত্তর, ‘‘প্রভাবশালীদের একজনই আমায় ফাঁসিয়েছে।’’
কে সেই ‘প্রভাবশালী’, তা গাড়ি থেকে নেমে আদালতের দরজা পর্যন্ত কয়েক সেকেন্ডের রাস্তায় স্পষ্ট করেননি তাপস। যিনি নিয়োগ দুর্নীতিতে অন্যতম অভিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত। তবে আদালতে যাওয়ার পথে ওই অল্প সময়ে আরও অনেক কথাই বলেছেন তাপস।
রবিবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার করা হয়েছিল তাপসকে। গ্রেফতারির পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অনেক কিছুই বলেছিলেন, তাপস। এমনকি কুন্তলের বিরুদ্ধেও রবিবার অনেক কথা বলতে শোনা গিয়েছিল তাঁর মুখে। তাপস বলেছিলেন, ‘‘কুন্তল ঘোষ তো অভিযোগ করবেই, সেটাই তো স্বাভাবিক। আমি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছি, অতএব সে করবেই।’’ সোমবারও নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে এবং আদালতে ঢোকার মুখে কুন্তলকে নিয়ে মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে তাপসকে। টাকা নেওয়ার তাপসকে বেশ ক্ষুব্ধ স্বরেই বলতে শোনা যায়, ‘‘আমি টাকা কোথায় নিলাম, টাকা ডিমান্ড করেছি। আমি কেন টাকা নেব? কুন্তল ঘোষকে যে টাকা দেওয়া হয়েছে, সেটাই আদায় করতে চেয়েছিলাম।’’
এমনকি, অডিয়ো ক্লিপে যে ৫০ লক্ষ টাকার কথা শোনা গিয়েছিল, সে প্রসঙ্গেও তাপসকে বলতে শোনা যায়, ‘‘শুধু ৫০ লক্ষ কেন, আমি ১৯ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলাম।’’ কিন্তু কুন্তলকে নিয়ে এত কথা বললেও ‘প্রভাবশালী’ বিষয়ে ওই একটিই মন্তব্য করেছেন তাপস। বস্তুত, এই প্রথম তাঁর মুখে প্রভাবশালীদের কথাও শোনা গেল।
নিয়োগ মামলার ‘প্রভাবশালী’ হিসাবে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বিধায়ক মানিক এবং পর্ষদের সভাপতিদের নাম বার বার বলেছে তদন্তকারী সংস্থাগুলি। তবে প্রভাবশালী বলতে এঁদেরই বোঝাতে চাইছেন কি না, তা স্পষ্ট করেননি তাপস। নিজাম প্যালেস থেকে বেরোনোর সময় তাপস সোমবার বলেন, ‘‘আমি অভিযোগ করেছিলাম, তাই অভিযুক্ত হলাম।’’