Shanti Prasad Sinha

সেই একই টেপ রেকর্ডার বাজাচ্ছেন! জামিন পেলে ওরা কি নাচবে? কোর্টে ফের তোপের মুখে সিবিআই

সিবিআইয়ের আবেদনের জবাবে শান্তিপ্রসাদের আইনজীবী জানতে চেয়েছিলেন, ইতিমধ্যেই ২৫৯ দিন হেফাজতে কাটিয়ে ফেলেছেন তিনি। হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজন তখন কেন মনে পড়েনি সিবিআইয়ের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৩ ১৪:৪৬
Share:

এসএসসির নিয়োগ সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির প্রধান ছিলেন শান্তিপ্রসাদ। তাঁকে নিয়ে মামলাতেই ভর্ৎসনা করা হয়েছে সিবিআইকে। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

নিয়োগ মামলায় আবার আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সোমবার শান্তিপ্রসাদ সিনহার বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের মামলার শুনানি ছিল আদালতে। সেখানে শান্তিপ্রসাদকে আরও একবার হেফাজতে চেয়ে আদালতে সিবিআই আর্জি জানালে বিচারক কিছুটা অসন্তোষের সুরেই জানতে চেয়েছেন, ‘‘সেই একই টেপ রেকর্ডার বাজাচ্ছেন! জামিন পেলে ওরা কি নাচবে?’’ আদালতের এই প্রশ্নের স্পষ্ট কোনও জবাব দিতে পারেনি সিবিআই।

Advertisement

নিয়োগ মামলা অভিযুক্তরা এর আগে যত বারই আদালতে জামিনের আবেদন করেছেন, সিবিআই তার বিরোধিতা করেছে। প্রত্যেক শুনানিতেই নতুন করে তাঁদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে সিবিআই। সোমবার সত্তরোর্ধ্ব শান্তিপ্রসাদের ক্ষেত্রেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। শান্তিপ্রসাদকে নতুন করে হেফাজতে চেয়ে আবেদন করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর পরেই আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

আদালতে শান্তিপ্রসাদের আইনজীবী জানতে চেয়েছিলেন, ইতিমধ্যেই হেফাজতে ২৫৯ দিন কাটিয়ে ফেলেছেন শান্তিপ্রসাদ। যদি নতুন করে তাঁকে হেফাজতেই নেওয়ার প্রয়োজন থেকে থাকে, তবে সে কথা গত ২৫৯ দিনে কেন মনে পড়েনি সিবিআইয়ের। আইনজীবী এই প্রশ্ন করার পরে বিচারকও সিবিআইকে নির্দেশ দেন প্রশ্নটির জবাব দিতে। কিন্তু সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার বা আইনজীবী এর স্পষ্ট কোনও জবাব দিতে পারেননি। কিছুটা ঘুরপথে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী আদালতকে জানান, ‘‘ওঁদের জামিন দিলে সমাজ তা মেনে নেবে না। সমাজের মানুষকে নৈতিক ভাবে উদ্বুদ্ধ করতেই ওঁদের হেফাজতে নেওয়া দরকার।’’ তার পরেই বিচারক পাল্টা প্রশ্ন করেন, সিবিআই কেন একই কথা টেপ রেকর্ডারের মতো বার বার বলে চলেছে? অভিযুক্তদের জামিন দেওয়া হলে কী হতে পারে বলে আশঙ্কা সিবিআইয়ের? তারা কী নাচবেন?

Advertisement

এসএসসির নিয়োগ সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির প্রধান ছিলেন শান্তিপ্রসাদ। কোটি কোটি টাকার নিয়োগ দুর্নীতির রাশ অনেকটাই তাঁর হাতে ছিল বলে অভিযোগ সিবিআইয়ের। একদা যোগমায়া দেবী কলেজের শিক্ষক শান্তিপ্রসাদ ২০১২ সালে অবসর নেওয়ার পর তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আনুকূল্যেই এসএসসির বোর্ডে নিযুক্ত হয়েছিলেন বলে চার্জশিটে জানিয়েছিল সিবিআই। শুধু তা-ই নয়, ৬৮ বছরের শান্তিপ্রসাদকে এসএসসিতে নিয়ে আসার জন্য এসএসসি আইনেও বদল আনা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছিল সিবিআই। পরে নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত স্কুলের চাকরি ‘বিক্রি’র দুই দালাল প্রসন্ন রায় এবং প্রদীপ কুমার সিংহের সঙ্গে শান্তিপ্রসাদের নিয়মিত যোগাযোগেরও ‘প্রমাণ’ পাওয়া যায় বলে জানিয়েছিল সিবিআই। সেই অভিযোগের জেরেই গত অগস্টে গ্রেফতার করা হয় শান্তিপ্রসাদকে। তার পর থেকে অদ্যাবধি তিনি বন্দি অবস্থাতেই রয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement