শিক্ষিকাদের ক্ষোভের সঙ্গে সঙ্গে পড়ুয়া-বিক্ষোভও শুরু হয়েছে। প্রতীকী ছবি।
বদলি নিয়ে স্কুলশিক্ষকদের দীর্ঘ কালের সমস্যার সুরাহায় ‘উৎসশ্রী’ পোর্টাল চালু করার পরেও অনুযোগ-অভিযোগের স্রোত বন্ধ হয়নি। এখন স্কুলে স্কুলে ক্ষোভ জমছে ‘সার্ভিস প্লেসমেন্ট’ বা শিক্ষক-ঘাটতির স্কুলে কাজ চালানোর জন্য নিকটবর্তী স্কুলের শিক্ষককে সাময়িক ভাবে বদলি করে নিয়ে আসার ব্যবস্থাকে ঘিরেও। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ক্ষোভের সঙ্গে সঙ্গে পড়ুয়া-বিক্ষোভও শুরু হয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঘুটিয়ারি শরিফের একটি স্কুলের পাঁচ জন শিক্ষকের এই সাময়িক বদলি ঘিরে এ দিন বিক্ষোভ দেখায় পড়ুয়ারা। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ছাপিয়ে তারা ঘুটিয়ারি শরিফ স্টেশনে রেল অবরোধও করে।
রাজ্যের অনেক স্কুলেই শিক্ষকের অভাব। অনেক স্কুলেই সব বিষয়ের প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক বা শিক্ষিকা নেই। স্কুলে কোনও বিষয়ে শিক্ষক কম থাকলে আশপাশের যে-স্কুলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষক বেশি, সেখান থেকে কোনও শিক্ষককে ওই স্কুলে কিছু দিনের জন্য বদলি করার ব্যবস্থার নামই ‘সার্ভিস প্লেসমেন্ট’। বিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনারের নির্দেশেই জেলার বিদ্যালয় পরিদর্শক মারফত ১৩টি জেলায় এই সাময়িক বদলি শুরু হয়েছে। কিন্তু শিক্ষকদের অভিযোগ, এই সাময়িক বদলি চলছে সার্ভিস প্লেসমেন্টের পুরো নিয়ম না-মেনেই।
অভিযোগ, কোনও স্কুলের কোনও একটি বিষয়ের এক বা দু’জন শিক্ষক থাকলে সেই শিক্ষকদেরও সাময়িক ভাবে বদলি করা হচ্ছে অন্য স্কুলে। অনেক সময়েই নিকটবর্তী স্কুলে সাময়িক বদলি না-করে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে ৭০-৮০ কিলোমিটার দূরের স্কুলে। ফলে এক দিকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ক্ষোভ বাড়ছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষকদের ছাড়তে চাইছে না ছাত্রছাত্রীরাও। সমস্যা ও ক্ষোভ ধূমায়িত হচ্ছে দু’দিক থেকে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সুদীপা ভদ্র বলেন, “আমাদের স্কুলে সার্বিক ভাবে শিক্ষক ও পড়ুয়ার অনুপাত ঠিকই আছে। কিন্তু অঙ্কের শিক্ষিকা মাত্র এক জন। সেই শিক্ষিকাকে পাশের একটি স্কুলে সাময়িক বদলি করা হয়েছে। আমার প্রশ্ন, আমাদের স্কুলে এখন অঙ্ক করাবেন কে?” শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশ্ন, সাময়িক বদলির নামে ঠিক কত দিনের জন্য বদলি করা হল, তারও কোনও নির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারছে না শিক্ষা দফতর। মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, “সাময়িক বদলি করে স্কুলগুলিতে শিক্ষকের অভাব পূরণ করা যাবে না। দ্রুত নিয়োগ দরকার। আমরা বিকাশ ভবনে গিয়ে স্কুলশিক্ষা কমিশনারের কাছে এ বিযয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি।”