—ফাইল চিত্র।
ঘরে-বাইরে প্রশ্নের মুখে এক মাস পিছিয়ে গেল সাধারণ ধর্মঘট। আগামী ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে ২৮ ও ২৯ মার্চ দেশ জুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি। ধর্মঘট পিছিয়ে যাওয়ায় আপাতত স্বস্তি মিলল বঙ্গ সিপিএমের! তবে বাৎসরিক এই ধর্মঘটে কাজের কাজ আদৌ কিছু হচ্ছে কি না, সেই মৌলিক প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
লকডাউন ও করোনার ধাক্কায় বিপর্যস্ত আর্থিক পরিস্থিতির মধ্যে দু’দিনের সাধারণ ধর্মঘট সঙ্গত কি না, সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল বাম শিবিরেই। তার সঙ্গে এ রাজ্যে বামেদের জন্য বাড়তি সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছিল ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যের বহু পুরসভায় নির্বাচন। পুরভোটের সময়ে দু’দিনের ধর্মঘট কী ভাবে করা সম্ভব, সেই প্রশ্ন তুলে ওই কর্মসূচির মেয়াদ কমিয়ে দেওয়া বা শিল্প ধর্মঘটের দিকে যাওয়ার দাবি তুলেছিলেন সিপিএমের রাজ্য কমিটির বেশ কিছু সদস্য। দু’দিনের ভার্চুয়াল বৈঠকের শেষ দিনে, শুক্রবার জবাবি বক্তৃতায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র জানান, ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তারাই নেবে। আপাতত যেখানে পুরভোট নেই, সেখানে ধর্মঘটের সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিতে হবে। আর যেখানে পুরভোট আছে, সেখানে ধর্মঘটের বিষয়গুলিকে প্রচারের মধ্যে তুলে ধরতে হবে। ভোট যেখানে আছে, সেখানে সাংগঠনিক ভাবে পুরোদস্তুর ধর্মঘটের জন্য কাজ করা সম্ভব না-ও হতে পারে। রাজ্য কমিটির ওই বৈঠক শেষ হওয়ার পরে সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি করোনা পরিস্থিতির কারণ দেখিয়েই সাধারণ ধর্মঘট আপাতত পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘এই ধরনের ধর্মঘটের ডাক কয়েক মাস আগে থেকেই দেওয়া হয়। এ বার অনেক জায়গায় ২৩-২৪ ফেব্রুয়ারি ধর্মঘটের দেওয়াল লাগানো হয়ে গিয়েছিল। এখন ধর্মঘট পিছিয়ে যাওয়ায় পুরভোটের সঙ্গে অন্তত সংঘাত হবে না। তবে পুরভোট নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন শেষ পর্যন্ত কী করে, তা-ও দেখতে হবে!’’
দলের আসন্ন রাজ্য সম্মেলনের জন্য খসড়া রাজনৈতিক প্রতিবেদনের উপরে মতামত ও সংশোধনী জমা পড়লে তা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট চূড়ান্ত করার ভার রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীকেই দেওয়া হয়েছে রাজ্য কমিটির এ বারের বৈঠকে। বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করার মূল লক্ষ্য সামনে রেখেই পুরভোটে লড়াইয়ের কথাও বলা হয়েছে। রাজ্য নেতৃত্বের বক্তব্য, স্থানীয় স্তরে কোথায় কাদের সঙ্গে আসন সমঝোতা হবে, তা স্থানীয় বা জেলা নেতৃত্বই ঠিক করবেন। এর পাশাপাশি, দল-বিরোধী কাজ ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য এবং আলিপুরদুয়ার চা-বলয়ের নেতা রবীন রাইকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে বৈঠকের শেষ দিনে।