চিকিৎসাধীন: অস্ত্রোপচারের পরে চুঁচুড়া হাসপাতালে খান বাহাদুর শেখ। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।
বাড়ির নিষেধ না শুনেই কলকাতার পথে পা বাড়িয়েছিল দশম শ্রেণির সাত কিশোর। শহিদ দিবসের সমাবেশে যোগ দিতে শুক্রবার রাতে তারা বেরিয়ে পড়েছিল প্রতিবেশীদের সঙ্গে। কাল হল সেটাই। ভিড় ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে হাত-পা খোয়ালো এক কিশোর।
শনিবার সকাল ১০ টা নাগাদ ব্যান্ডেল স্টেশনে বিশ্বভারতী ফাস্ট প্যাসেঞ্জার থেকে পড়ে যায় বছর ষোলোর খান বাহাদুর শেখ। সহ-যাত্রীরাই চেন টেনে ট্রেন থামান। ছুটে আসেন রেল পুলিশের কর্মীরা। ট্রেন ও প্লাটফর্মের ফাঁকে পড়ে যাওয়া বাহাদুরকে টেনে বের করা হয় রক্তাক্ত অবস্থায়। রেলপুলিশের এক কর্তা জানান, এ দিন সকাল থেকে স্টেশনে নজরদারি চালানো হচ্ছিল। সে সময়ই দুর্ঘটনা ঘটে।
চুঁচুড়া মহকুমা হাসপাতালে দীর্ঘ অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই কিশোরের বাঁ হাত কনুইয়ের উপর থেকে এবং বাঁ পায়ের গোড়ালি থেকে বাদ দিতে হয়েছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত চিকিৎসকরা তাকে সঙ্কটমুক্ত বলে ঘোষণা করতে পারেননি।
বীরভূমের মুরারইয়ের বনরামপুরে বাসিন্দা বাহাদুর রাজগ্রাম মহামায়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। বন্ধুদের নিয়ে শুক্রবার রাত ২টোয় পাড়ার লোকজনের সঙ্গে রাজগ্রাম স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে রামপুরহাটে আসে বাহাদুর। সেখান থেকে এ দিন ভোরে হাওড়াগামী বিশ্বভারতী ফাস্ট প্যাসেঞ্জারে ওঠে তারা।
তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি আসগার আলি জানান, ব্যান্ডেল স্টেশনে ট্রেন থামলে জল নিতে নামে বাহাদুর। কিন্তু ভিড় এত ছিল যে জল ভরতেও দেরি হয়ে যায়। ট্রেন ছেড়ে দেয়। একটি দরজার লোহার রড ধরে ওঠার চেষ্টা করতে গিয়েই হাত ফসকে প্লাটফর্ম আর ট্রেনের ফাঁক গলে নীচে পড়ে যায় বাহাদুর।
বাহাদুরের এক সহপাঠী আলম শেখ বলে, ‘‘অনেক লোক ট্রেনের দরজায় ভিড় করে দাঁড়িয়েছিল। সে জন্যই বাহাদুর উঠতে পারছিল না। ট্রেনের গতিও বেড়ে গিয়েছিল।’’