জগদ্ধাত্রী পুজোর ঐতিহ্য নিয়ে চর্চা হলে কৃষ্ণনগরের কথা আসবেই।
বলা হয়, স্বপ্নাদেশ পেয়ে মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র দেব জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু করার পরেই তা ছড়িয়ে পড়ে বাংলা জুড়ে।
কৃষ্ণনগরে রাজবাড়ির পুজো ছাড়াও আরও অনেক জগদ্ধাত্রী পুজো হয়। তবে তার মধ্যে অন্যতম ‘বুড়িমার পুজো’।
শোনা যায়, প্রায় ২৫০ বছরের পুরনো এই পুজোর শুরু ১৭৭২ সালে, যা আজ চাষাপাড়া বারোয়ারি পুজো নামে পরিচিত।
রাজা কৃষ্ণচন্দ্র কৃষ্ণনগর রাজবাড়িতে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন করার পরেই চাষাপাড়া বারোয়ারিতে পুজো শুরু হয়।
কথিত, কোনও এক সময়ে রাজা চাষাপাড়ার পুজোর দায়ভার নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন। তখন দেবী নাকি তাঁকে স্বপ্নাদেশ দেন, চাষাপাড়ায় যে সব লেঠেলরা রয়েছেন, তাঁরাই এই পুজোর দায়ভার বহন করবেন।
তবে কারও কারও মতে, রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের এই স্বপ্নাদেশ পাওয়ার গল্প সত্যি নয়। রাজা নাকি তাঁর বাড়ির পুজো অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই প্রজাদের অনুদান দিতেন।
দেবীর এই ‘বুড়িমা’ নাম কিন্তু প্রথম থেকেই ছিল না। আনুমানিক ৭০-৭৫ বছর আগে এই নাম দেওয়া হয়েছে।
বুড়িমার বিসর্জন রীতিতেও আছে বৈশিষ্ট্য। কৃষ্ণনগরের সকল প্রতিমা বিসর্জনের পরে সব শেষে বুড়িমার বিসর্জন করা হয়। যত ক্ষণ না প্রতিমার বিসর্জন হচ্ছে, তত ক্ষণ রাস্তার দু’ধারে ভক্তরা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন।
প্রথা মেনে দেবী কাঁধে চেপেই বিসর্জনের পথে যান। আগে তাঁকে রাজবাড়ি ঘোরানো হয়, তার পরে নিয়ে যাওয়া হয় জলঙ্গীর ঘাটে। পুজো উপলক্ষে পাঁচ দিন ধরে চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।