মনিয়াতুন্নেসা
বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হয়নি মেয়েটি। তা নিয়ে মাঝে মধ্যেই উত্ত্যক্ত করত এক যুবক। শেষমেশ, রাস্তায় ধরে জোর করে মেয়েটির মুখে বিষ মেশানো দুধ ঢেলে দেয় বলে অভিযোগ। মারা গিয়েছে মনিয়াতুন্নেসা (১৭) নামে কিশোরী। গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত রাজিবুল হোসেন ওরফে পাপাই নামে এক অটো চালককে। খুনের প্রতিবাদে সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার মাটিয়া থানার মালতিপুর হাইস্কুলের সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান ওই কিশোরীর স্কুলের পড়ুয়া ও অভিভাবকেরা।
মনিয়াতুন্নেসার বাড়ি মালতিপুরেই। বৃহস্পতিবার মারা যায় মেয়েটি। রবিবার তার বাবা মতিয়ার রহমান রাজিবুল-সহ দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। পুলিশ গ্রেফতার করে তাকে। বসিরহাটের এসিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। রাজিবুলের বন্ধু ইমরান মণ্ডলের খোঁজে পুলিশ তল্লাশি শুরু করেছে। রাজিবুল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলে, ‘‘আমাকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে।’’ সে কথা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মতিয়ার পোশাক ব্যবসায়ী। তিন মেয়ের মধ্যে মেজো মনিয়াতুন্নেসা মালতিপুর হাইস্কুলে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ত। বছর দু’য়েক ধরে স্থানীয় খালভেড়ি পাড়ার বাসিন্দা রাজিবুল তাকে স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে নানা ভাবে উত্ত্যক্ত করত বলে অভিযোগ।
বাবা-মাকে সব বলেছিল মেয়েটি। মা রাবেয়া বিবি রাজিবুলকে ডেকে সাবধান করে দেন। ছেলেটির বাড়ির লোককেও জানান। তার পড়েও টনক নড়েনি রাজিবুলের।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্কুলের সামনে রাস্তায় মনিয়াতুন্নেসার পথ আটকায় রাজিবুল ও ইমরান। অভিযোগ, রাজিবুল মনিয়াতুন্নেসাকে বিয়ের জন্য জোরাজুরি করে। মেয়েটি তাতে রাজি না-হওয়ায় হাত ধরে টানাটানি শুরু করে। মতিয়ার বলেন, ‘‘জোর করে মেয়ের মুখে বিষ মেশানো দুধ ঢেলে দিয়ে ওরা পালায়। মেয়ে অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে এসে সেই কথা জানায়। সে সব কথা বলতে বলতেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে রাতে সেখানেই মারা যায়।’’
মনিয়াতুন্নেসার দেহ ময়না-তদন্তের পরে গ্রামে আসে। শেষকৃত্য হয়। রবিবার থানায় অভিযোগ করে পরিবার। সহপাঠী-সহ স্থানীয় বাসিন্দারা জানতে পেরে ক্ষোভ জানান। এ দিন দুপুরে খোলাপোতা-হাড়োয়া রাস্তার মালতিপুর হাইস্কুলের সামনে অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের কথায়, ‘‘স্কুলের সামনে তাণ্ডব চলছে। পুলিশের নজরদারির অভাবে প্রায়ই নানা ঘটনা ঘটছে।’’