মেয়েটি চায় পড়াশোনা করতে। কিন্তু বিয়ে দিয়ে দিতে চান বাবা-মা।
সম্প্রতি নিউটাউন থানার একটি স্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর কাছ থেকে এই নালিশ পেয়ে স্থানীয় পুরপ্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন প্রধান শিক্ষিকা। পুরপ্রশাসনের কাছ থেকে খবর পেয়ে বিধাননগর ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিশ ওই কিশোরীর বাবা ও মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কিন্তু বাবা ও মা তাঁদের মেয়ের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের দাবি, মেয়েকে তাঁরা লেখাপড়া শেখাতে চান। বিয়ে দেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।
এর পরেই শুরু হয় বছর চোদ্দোর ওই কিশোরীর উপরে নির্যাতন। কিন্তু নির্যাতনের মুখে দাঁড়িয়েও নিজের সিদ্ধান্ত থেকে এক পা নড়েনি মেয়েটি। সে ফের তার স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে অভিযোগ জানায়। এর পরে সোমবার প্রধান শিক্ষিকা কলকাতা চাইল্ড লাইনে অভিযোগ জানান। ওই চাইল্ড লাইনের তরফে কিশোরীর সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করা হয়। কলকাতা চাইল্ড লাইন সূত্রের খবর, নির্যাতনের অভিযোগ করেছে ওই কিশোরী। এর পরে চাইল্ড লাইনের তরফে ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানাকে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নিলে চাইল্ড লাইন-ই পদক্ষেপ করবে।
এই ধরনের ঘটনা শহরবাসী প্রত্যক্ষ করেছিলেন স্বল্প দৈর্ঘ্যের এক ছবিতে। শিবপ্রসাদ-নন্দিতা জুটির পরিচালনায় সেই ছবিতে এক স্কুল শিক্ষিকার কাছেই অভিযোগ করেছিল এক ছাত্রী। তার পরে স্কুল কর্তৃপক্ষই বিয়ে রুখে দিয়েছিলেন।
এ দিন রাতে ওই কিশোরীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মা ফের দাবি করেন, তাঁরা মেয়েকে লেখাপড়া শেখাচ্ছেন। এখন বিয়ে দেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। কেন মেয়ে এমন অভিযোগ করছে, সে সম্পর্কে তাঁরা জানেন না বলে দাবি করেন মা। বিধাননগর পুলিশের এক কর্তা জানান, এক নাবালিকাকে বিয়ে দেওয়া হবে বলে একটি অভিযোগ পেয়েছিল পুলিশ। কিন্তু কিশোরীর বাবা-মা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এ দিন রাতেও ফোনে ওই কিশোরী জানিয়েছে, এ নিয়ে জানাজানি হওয়ার পরে তাকে মারধর করা হচ্ছে।
বিধাননগর পুরসভার এক বরো চেয়ারম্যান বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (ক্রীড়া) প্রসেনজিৎ সর্দারের মাধ্যমে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি পুলিশকেও ঘটনাটি জানান। যদিও নির্যাতনের অভিযোগ সোমবার রাত পর্যন্ত আসেনি বলে পুলিশ সূত্রের দাবি।