ফাইল চিত্র।
রাজ্যের সীমা ছাড়িয়ে দেশ, এমনকি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও প্রশংসা পেয়েছে কন্যাশ্রী প্রকল্প। এ বার সেই প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা আরও প্রসারিত করছে রাজ্য সরকার। ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পের আওতায় কারিগরি প্রশিক্ষণ পাবেন কন্যাশ্রীর মেয়েরাও।
রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা দফতরের উদ্যোগে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পটি চালু হয়। যে-সব যুবক-যুবতী রাজ্যের প্রথাগত কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুযোগ পাননি, এই প্রকল্পে তাঁদের জন্য বিকল্প প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ বার সেই প্রশিক্ষণের সুযোগ পেতে চলেছেন কন্যাশ্রীর মেয়েরাও। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলার দায়িত্বপ্রাপ্তদের মধ্যে স্তরে বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই তা চূড়ান্ত রূপ পেতে পারে বলে প্রশাসনিক মহলের খবর।
অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বছরে এক হাজার টাকা স্কলারশিপ পান কন্যাশ্রীর মেয়েরা। ১৮ বছরে উত্তীর্ণ হলে এক বারে ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয় কন্যাশ্রীদের। এ বার ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির কন্যাশ্রীরা। ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ চলাকালীন যাতায়াত এবং টিফিনের জন্য প্রশিক্ষণপ্রার্থী প্রতিদিন ৫০ টাকা ভাতা পেতে পারেন। এ ক্ষেত্রে সেই প্রার্থীর নিয়মিত উপস্থিতি, তাঁর প্রশিক্ষণের অগ্রগতি, মূল্যায়ন অনেকাংশে প্রাধান্য পেয়ে থাকে। সেই অনুযায়ী ওই ভাতা পান প্রশিক্ষণপ্রার্থী। রাজ্য সরকারের হয়ে এই প্রশিক্ষণের বিষয়টি দেখাশোনা করে কারিগরি শিক্ষা দফতরের অধীন পশ্চিমবঙ্গ সোসাইটি ফর স্কিল ডেভেলপমেন্ট (পিবিএসএসডি)। প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী বা বেসরকারি সংস্থা। ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পে বিভিন্ন টেলিকম, টেলারিং, বিউটিশিয়ান, কম্পিউটার, হস্তচালিত, অলঙ্কার-সহ নানান বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ৮০ ঘণ্টা থেকে ৬০০ ঘণ্টা পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এই প্রকল্পে। তার পরে প্রশিক্ষিতদের কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করে থাকে প্রশিক্ষণে যুক্ত সংস্থাগুলি।
উৎকর্ষ প্রকল্পকে আরও বেশি করে আমজনতার কাছে পৌঁছে দিতে অনেক ক্ষেত্রে কন্যাশ্রী ক্লাবগুলিকে কাজে লাগানো হয়ে থাকে। এ বার সেই কন্যাশ্রীর মেয়েরা সরাসরি এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছেন। সে-ক্ষেত্রে তাঁদের বার্ষিক ভাতার সঙ্গে এই ভাতা যুক্ত হবে। উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্পে প্রতি বছর ছ’লক্ষ যুবক-যুবতীকে এই প্রশিক্ষণের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে রাজ্য।
প্রশাসনিক মহলের একাংশের মতে, কারিগরি শিক্ষা দফতরের অধীন উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্পের মধ্যে কন্যাশ্রীর মেয়েরা অন্তর্ভুক্ত হলে এক দিকে লক্ষ্যমাত্রা দ্রুত পূরণ হতে পারে। সেই সঙ্গে উৎকর্ষ বাংলার প্রশিক্ষণ ভাতার মাধ্যমে কন্যাশ্রীর মেয়েদের পাশে দাঁড়ানো যাবে আরও ভাল ভাবে। যদিও পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, এই ভাবনার পিছনে ‘পাইয়ে দেওয়া’র রাজনীতিই কাজ করছে।