অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি
অনুব্রত-হীন বীরভূমে দলের সাংগঠনিক হাল-হকিকত কী, তা খতিয়ে দেখতে মাঠে নেমেছে ‘টিম অভিষেক’।
তৃণমূল সূত্রে খবর, বীরভূমের নানা প্রান্তে গিয়ে দলের স্থানীয় নেতাদের সম্পর্কে খোঁজখবর করছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোকজন। স্থানীয় নেতার ভাবমূর্তি কেমন, এলাকায় গ্রহণযোগ্যতা কেমন, কোনও ক্ষোভ-বিক্ষোভ বা দুর্নীতির অভিযোগ আছে কি না— এমন নানা প্রশ্নের উত্তর নিচ্ছে ‘টিম এবি’-র সদস্যেরা (নিজেদের পরিচয় এ ভাবেই দিচ্ছেন তাঁরা)। অনেকটা ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের আইপ্যাক সংস্থার ধাঁচেই এই সমীক্ষা চালানো হচ্ছে।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই জেলার বিভিন্ন ব্লক ঘুরে দলের সব স্তরের নেতাদের ঠিকুজি-কুষ্ঠি সংগ্রহ করে যথাস্থানে পৌঁছে দিয়েছে এই দলটি। যা নিয়ে দলের অন্দরেই চর্চা শুরু হয়েছে, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে ঘোষিত ‘নতুন তৃণমূল’ গঠন বা শুদ্ধকরণের কাজ কি শুরু করল দল? গরু পাচার মামলায় জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডলের খাসতালুকে আগামী দিনে তবে কি অভিষেকের প্রভাব বাড়ার ইঙ্গিতই দিচ্ছে এই সমীক্ষা?
বীরভূম জেলা তৃণমূলের একাধিক নেতা জানাচ্ছেন, ব্লক, শহর কিংবা যুব সভাপতি, মহিলা শাখার সভানেত্রী, অঞ্চল থেকে বুথ স্তরে যাঁদের কাঁধে সংগঠনের ভার, তাঁদের সম্পর্কে জানতে চাওয়া হচ্ছে। নির্দিষ্ট পদের দায়িত্ব তিনি কী ভাবে সামলাচ্ছেন, এলাকার মানুষ ও দলের কর্মীরা তাঁকে কী চোখে দেখেন, এমন সব বিষয় দেখা হচ্ছে। ওই নেতা দলীয় পদের বাইরে কী করেন (পেশা), ঠিকাদারির সঙ্গে যুক্ত কি না, গুরুতর কোনও অভিযোগ আছে কি না, কেমন সম্পত্তি করেছেন— এমন নানা প্রশ্নের যথাযথ উত্তর চাইছে এই টিম।
‘টিম অভিষেক’-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে, এমন জেলা নেতাদের একাংশ বলছেন, ‘‘কেবল এলাকার মানুষজনের থেকে বা বিরোধী গোষ্ঠীর লোকজনের থেকেই নয়, সরাসরি আমাদের কাছেও বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি কী করে সংগঠন আরও মজবুত হবে, সেটাও জানতে চাইছেন ওঁরা।’’
গত লোকসভা নির্বাচনে খারাপ ফল করার পরে এ রাজ্য শাসকদল পিকে-র হাত ধরেছিল। যে ভাবে পিকে ও তাঁর সংস্থা মানুষের ক্ষোভের কথা জানতে একগুচ্ছ কর্মসূচি নেয়। এখন বীরভূমেও অনেকটা সেই ধাঁচেই জানার চেষ্টা হচ্ছে, দলের কোন নেতার সম্পর্কে মানুষের কী ক্ষোভ রয়েছে। জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘এই সব তথ্য বিশ্লেষণ করার পরে দলের শীর্ষ স্তর থেকে কিছু পদক্ষেপ করা হতে পারে বলেই মনে হচ্ছে।’’