প্রতীকী ছবি।
সরকার পোষিত ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের লক্ষাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী জানুয়ারি থেকে বর্ধিত হারে বেতন পাবেন কি না, শিক্ষা শিবিরে তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, বেশির ভাগ সময়ে সার্ভার ডাউন থাকায় তাঁরা ‘রোপা ২০১৯’ অনুযায়ী পরিবর্তিত বেতনের ফর্ম পূরণের জন্য ‘অপশন’ এবং ‘ডেট ফিক্সেশন’ বা নির্দিষ্ট তারিখ আপলোড করতে পারছেন না। ফলে শিক্ষকদের ব্যক্তিগত বেতনক্রম ঠিক করা যাচ্ছে না। শেষ ইনক্রিমেন্ট অনুযায়ী প্রত্যেক শিক্ষক বা শিক্ষিকার ক্ষেত্রে ওই তারিখ আলাদা হওয়ার কথা।
ওই ফর্ম পূরণে জটিলতার জেরেই চলতি মাস থেকে বর্ধিত বেতন পাওয়ার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে জানাচ্ছে শিক্ষা শিবির। শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, নেটওয়ার্কের সমস্যা ও সার্ভারের শ্লথ গতির জন্য এ মাসে ‘রোপা ২০১৯’ অনুযায়ী সব শিক্ষকের বর্ধিত হারে বেতন পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তবে যাঁরা জানুয়ারি থেকে পাবেন না, তাঁরা ফেব্রুয়ারি থেকে বর্ধিত বেতন পাবেন বলেই আশা করা হচ্ছে। জানুয়ারির বকেয়াও পাবেন তাঁরা।
সাইবার-জট কেন? ‘রোপা ২০১৯’ অনুযায়ী শিক্ষকদের বর্ধিত বেতনের তারিখ আপলোড করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে ২০১৬-র ১ জানুয়ারি থেকে। প্রথমে জেলার পরিদর্শকের দফতর থেকে হাতে-কলমে কাজটি করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু পরে বলা হয়, পুরো প্রক্রিয়াটি করতে হবে অনলাইনে। জেলা পরিদর্শকের অফিস থেকে ১৯ জানুয়ারির মধ্যে সব স্কুলকে অনলাইন নিবন্ধীকরণ সারতে বলা হয়েছিল। অনলাইনে নিবন্ধীকরণ কী ভাবে হবে, তার জন্য প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হয়। প্রশিক্ষণ চলে ১৪ থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, অনলাইনে নিবন্ধীকরণের কাজ করতে গিয়ে তাঁরা দেখেন, সার্ভার ডাউন! ফলে ১৯ জানুয়ারির মধ্যে অনলাইনে নথিভুক্তি হয়নি অনেকেরই। এই নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।
আরও পড়ুন: টিএমসিপি করার জেরে এমফিলে বঞ্চনার নালিশ
মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, ‘‘অনলাইনেই শিক্ষকদের বেতন হয়। তাই অনলাইনে নিবন্ধীকরণের প্রশিক্ষণ ও প্রক্রিয়া আগে থেকে শুরু করলে ভাল হত।’’ শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, ‘‘শিক্ষা দফতরের তৎপরতা নেই। আমাদের দাবি, অনলাইনে ‘অপশন’ এবং বেতন-কাঠামো ঠিক করার পরে কবে স্কুলগুলি কাগজপত্র-সহ হার্ড কপি জমা দেবে, তার নির্দেশিকা দেওয়া হোক এবং জানুয়ারি থেকে নতুন বেতন পাওয়া নিশ্চিত করা হোক।’’
আরও পড়ুন: চাঁদা না-পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা নাবালিকাকে
শিক্ষক শিবিরের একাংশের দাবি, প্রথমে বলা হয়েছিল, বেতন হিসেবের ‘হার্ড কপি’ প্রমাণ-সহ নির্দিষ্ট বয়ানে ডিআই অফিসে জমা দিলেই হবে। ৮ জানুয়ারি নাগাদ জানানো হয়, অনলাইন ফিক্সেশন পোর্টালে ‘লিঙ্ক’ খোলার আগে হার্ড কপি জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। ডিআই অফিসের পাঠানো বয়ানের বদলে তা অনলাইনে পাঠাতে হবে। লিঙ্ক খোলার সাত দিনের মধ্যে হার্ড কপি জমা দিতে হবে ডিআই অফিসে। ১৩ জানুয়ারি লিঙ্ক সক্রিয় হলেও ১৬ তারিখ থেকে লিঙ্কে সমস্যা হয় বিভিন্ন জায়গায়।