প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুজোর ছুটি শেষ হচ্ছে আগামী ৬ নভেম্বর। শিক্ষা দফতর, স্কুল-কলেজে পঠনপাঠন শুরুর সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে ১৬ নভেম্বর থেকে। কিন্তু শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিভিন্ন শিক্ষাতায়নে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে সোমবার, ১ নভেম্বর থেকে। পুজোর ছুটি শেষ হওয়ার আগেই তাঁদের স্কুলে যাওয়ার এই ছাড়পত্র নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে শিক্ষকমহলে। যা নিয়ে কিঞ্চিৎ ক্ষোভও জমেছে অনেকের।
শিক্ষকদের একাংশের প্রশ্ন— পুজোর ছুটি শেষ হওয়ার আগেই তাঁদের স্কুলে হাজিরা দিতে হবে কেন? তাঁদের দাবি, ছুটিতে শিক্ষকদের অনেকেই বাইরে গিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে পয়লা নভেম্বর থেকেই তাঁদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হাজিরা দেওয়া কি বাধ্যতামূলক, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েই। এ ব্যাপারে, সোমবার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বেশ কিছু স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং কলেজের অধ্যক্ষরা জানিয়েছেন, এ নিয়ে তাঁরাও কিছুটা বিভ্রান্ত। তবে বাধ্যতামূলক নয়, শিক্ষকদের সুবিধা মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসার নির্দেশ দিচ্ছেন তাঁরা। সেই অনুযায়ী স্কুল-কলেজে রোস্টারও তৈরি করা হচ্ছে।
তবে শিক্ষকদের দাবি, কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নভেম্বরের ১ তারিখ থেকেই স্কুলে বা কলেজে আসার নির্দেশ দেন কর্তৃপক্ষ। প্রধান শিক্ষকের অনেকেই জানান, বেশ কিছু দিন ধরেই নানা কারণে শিক্ষকদের আসতে হচ্ছে। তাই নতুন নির্দেশিকায় শিক্ষকদের স্কুলে আসার নির্দিষ্ট অনুমতি দেওয়ায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য এ দিন বলেন, “আমি আজ সব শিক্ষককে স্কুলে আসতে বলিনি। রোস্টার অনুযায়ী তাঁদের আসতে বলা হয়েছে। আগামী ১৬ তারিখ থেকে স্কুলে পঠনপাঠন শুরু হবে। তার আগে স্কুলের পরিবেশ পঠনযোগ্য করে তুলতে হবে। সে জন্যই শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের পর্যায়ক্রমে ডাকা হচ্ছে।’’
হাওড়ার ডোমজুড় কেশবপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর দাস বলেন, ‘‘শিক্ষকদের তো একসঙ্গে ডাকা হচ্ছে না। ৮ নভেম্বরের পর সকলকে ডাকা হবে।’’ দমদম পার্কের কৃষ্ণপুর আদর্শ বিদ্যামন্দিরের শিক্ষিকা সুলগ্না পালের কথায়, ‘‘সকলের আসাটা বাধ্যতামূলক কিনা সেই নিয়ে শিক্ষা দফতরের বিজ্ঞপ্তি কিছুটা ধোঁয়াশা তৈরি করেছে। সোমবারের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে আমরা সকলে এসেছি। আগামী কাল কী করব, সেটা পরের বিজ্ঞপ্তি পেলে স্থির করা হবে।’’
আবার এর উল্টো সুরও শোনা গিয়েছে। কেষ্টপুরের দেশপ্রিয় বালিকা বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষিকা নাজরিল নাহার সাফ বলছেন, “শিক্ষা দফতরের বিজ্ঞপ্তিতে আমি কোনও ধোঁয়াশা দেখছি না। আমি সব শিক্ষিকাকে পয়লা নভেম্বর থেকে স্কুলে আসতে বলেছি।” রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের অধ্যক্ষদের মুখেও এমনই দু’ধরনের বক্তব্য—সুরেন্দ্রনাথ কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল কর জানান, সোমবার শিক্ষক-শিক্ষিকারা সকলেই কলেজে এলেও এর পর কলেজ খোলা পর্যন্ত প্রয়োজন মতো শিক্ষকদের ডেকে নেওয়া হবে। আলিপুর কলেজের অধ্যক্ষ জয়দীপ ষড়ঙ্গী বলছেন, ‘‘কলেজ খোলার বিষয়ে আজ বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানে যে শিক্ষক-শিক্ষিকাকে ডাকা হয়েছিল তাঁরা সকলেই এসেছিলেন। পরে প্রয়োজন মতো শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ডাকা হবে।’’ চিত্তরঞ্জন কলেজের অধ্যক্ষ শ্যামলেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এর পর থেকে যে দিন যাঁদের প্রয়োজন হবে তাঁদের ডাকা হবে।’’