প্রতীকী ছবি।
তৃতীয় সামগ্রিক মূল্যায়ন বা বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হচ্ছে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে। ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের নম্বর শিক্ষা দফতরের বাংলা শিক্ষা পোর্টালে আপলোড করতে হবে প্রধান শিক্ষকদের। এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা দফতর। এ ভাবে মূল্যায়নের সময়সীমা বেঁধে দেওয়ায় অসন্তোষ দানা বেঁধেছে শিক্ষকদের মধ্যে।
শিক্ষকেরা জানান, শিক্ষা দফতর প্রথমে নির্দেশ দিয়েছিল, তৃতীয় সামগ্রিক মূল্যায়ন ২৫ নভেম্বরের আগে শুরু করা যাবে না এবং ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে তা শেষ করতে হবে। তার পরে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের দাপটে যে-সব স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা যে-সব বিদ্যালয়ে ত্রাণ শিবির খোলা হয়, সেখানে পরীক্ষা পিছিয়ে যায় এক সপ্তাহ। শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে অনেক স্কুলে পরীক্ষা শেষ হবে ঠিকই। কিন্তু যে-সব স্কুল ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানে পরীক্ষা শেষ হতে হতে ১০-১২ ডিসেম্বর হয়ে যাবে। ফলে মূল্যায়নের জন্য খুবই কম সময় পাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন প্রশ্ন তুলছে, গ্রামাঞ্চলের যে-সব স্কুলে পড়ুয়া প্রচুর, সেখানে এত কম সময়ে খাতা দেখে শিক্ষা পোর্টালে নম্বর আপলোড করা যাবে কী ভাবে? ‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাসের বক্তব্য, গত বছর এই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল শিক্ষা দফতর। না-বদলে তারা সেই বিজ্ঞপ্তি ফের ছাপিয়ে দিয়েছে। গত বছরেও কম সময়ে মূল্যায়ন-তথ্য আপলোড করতে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল প্রধান শিক্ষকদের। অনেকে ঠিক সময়ে তথ্য জমা দিতে পারেননি। ‘‘এত কম সময়ে তাড়াহুড়ো করে কাজটা করতে গিয়ে যথাযথ মূল্যায়ন না-হওয়ারও আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে,’’ বলেন সৌদীপ্তবাবু। তাঁর মতে, প্রধান শিক্ষককে পড়ুয়াদের তথ্য আপলোড করতে হবে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে। অর্থাৎ তারও দু’-এক দিন আগে মূল্যায়ন শেষ করতে হবে শিক্ষকদের। এত কম সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সব কাজ শেষ করা কার্যত অসম্ভব।
মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক অনিমেষ হালদারের মতে, ‘‘অনেক সময়েই বাংলা শিক্ষা পোর্টালে তথ্য আপলোড করতে সমস্যা হয়। গ্রামে প্রায়ই ইন্টারনেট ডাউন থাকে। তাই এত কম সময়ে সব তথ্য পাঠানো মুশকিল।’’ শিক্ষক সংগঠনগুলির দাবি, পর্ষদের তালিকায় বড়দিনে আর লম্বা ছুটি থাকে না। তাই মূল্যায়নের সময়সীমা ২৫ ডিসেম্বরের আশেপাশে বেঁধে দেওয়া হোক।