ছোট একটা অ্যাম্পলিফায়ার সামনে রেখে নীল টি-শার্ট আর ধূসর বারমুডা পরে গান গাইছেন লম্বা দোহারা চেহারার এক মানুষ।
সবুজ গালিচার মতো নকশা কাটা চা-বাগান। তার মধ্যে থেকে ভেসে আসছে জনপ্রিয় একটি হিন্দি গান। সেই গানের তালে দু’টি পাতা-একটি কুঁড়ি তুলছেন বাগানের কর্মীরা। কেউ বা একটু বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন।
তবে সেই গানের উৎসস্থলে পৌঁছলে বোঝা যায়, এত ক্ষণ যেটা একটা জনপ্রিয় হিন্দি গান মনে হচ্ছিল, আসলে সেটা একটা প্যারোডি। জনপ্রিয় গানের সুরের সঙ্গে বসেছে নতুন কথা। আর ছোট একটা অ্যাম্পলিফায়ার সামনে রেখে নীল টি-শার্ট আর ধূসর বারমুডা পরে গান গাইছেন লম্বা দোহারা চেহারার এক মানুষ।
গত কয়েক দিনে এটা রোজকার দৃশ্য জলপাইগুড়ির নাগরাকাটার হোপ টি এস্টেটে। গায়ক বাগানের শ্রমিক কল্যাণ আধিকারিক অশোক ঝা। তিনি বাগানের বিভিন্ন ডিভিশনে এ ভাবেই গানের সুরে করোনা নিয়ে সচেতন করছেন শ্রমিকদের। সঙ্গে চলছে মনোরঞ্জনও। জনপ্রিয় হিন্দি গানের সুরের সঙ্গে বসিয়ে দিয়েছেন করোনা নিয়ে সচেতনতার তথ্য, সামাজিক দূরত্বের কথা। বেশ কয়েক বছর ধরেই এই বাগানে রয়েছেন অশোকবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘এঁদের পড়ার সময় কোথায়। অনেকেই পড়তে পারেন না।” তাই আইডিয়াটা তার মাথায় খেলে যায়। তিনি বলেন, ‘‘ছোটবেলায় নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানি, অনেক কিছু পড়লেও মনে থাকে না। কিন্তু বার বার শুনতে শুনতে মনে থাকে।” তাই তিনি গানের সুরে শ্রমিকদের করোনা নিয়ে সচেতন করছেন। এক দিকে, সচেতনতার কাজও হচ্ছে। অন্য দিকে, গানের সুরে বেশ ফুর্তিতে কাজের গতিও বাড়ছে শ্রমিকদের।