Price Hike

বাজারে হানার সময় দাম কমলেও আবার বৃদ্ধি পাচ্ছে আনাজের দাম, অভিযানই সার! দাবি করছেন ক্রেতারা

পশ্চিম মেদিনীপুরে ক্রেতাদের বড় অংশের অভিযোগ, যখন যে বাজারে অভিযান চলছে, সে বাজারের আনাজের দাম পাঁচ থেকে ১০ টাকা তখন কমিয়ে দিচ্ছেন খুচরো বিক্রেতারা। পরের দিন আবার বাজার অগ্নিমূল্য।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৪ ১৫:২৪
Share:

বাজারে অভিযান চললেও আনাজের দাম কমছে না বলেই অভিযোগ ক্রেতাদের। — ফাইল চিত্র।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর থেকে কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার বাজারে হানা দিচ্ছে টাস্ক ফোর্স। কিন্তু ক্রেতাদের একটা বড় অংশের দাবি, অভিযানই সার! কাঁচা আনাজের দামে হেরফের হচ্ছে না। অভিযানের সময় কোথাও দাম একটু কমলেও পরে আবার বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোথাও আবার প্রশাসনের নজরদারি চোখে পড়েনি বলেও অভিযোগ ক্রেতাদের।

Advertisement

টাস্ক ফোর্সের তরফে জানানো হয়েছে, কলকাতার নিউ মার্কেটের ভিতরে সব্জির দাম নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু বাইরের বাজারে ক্রেতাদের থেকে কিছু ক্ষেত্রে বেশি দাম নেওয়া হচ্ছে। কয়েক জন বিক্রেতা লঙ্কা দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছেন। যদুবাবুর বাজারে পেঁয়াজ, আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু গাজর, ভেন্ডির দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে। এক কেজি শসার দাম কোথাও ১০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। কোনও কোনও বিক্রেতা ৫০ টাকা নিচ্ছেন। টাস্ক ফোর্সের তরফে জানানো হয়েছে, অভিযানের পর সব্জির দাম ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কমেছে। সব মিলিয়ে কিছু জায়গায় ৩০ শতাংশ কমেছে।

পশ্চিম মেদিনীপুরে ক্রেতাদের বড় অংশের অভিযোগ, যখন যে বাজারে অভিযান চলছে, তখন সেই বাজারের আনাজের দাম পাঁচ থেকে ১০ টাকা কমিয়ে দিচ্ছেন খুচরো বিক্রেতারা। পরের দিন আবার বাজার অগ্নিমূল্য।

Advertisement

সোমবার পশ্চিম বর্ধমান জেলার জামুরিয়ার বাজারে হানা দেন আধিকারিকেরা। সঙ্গে ছিল পুলিশ। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, বেশ কয়েক জন বিক্রেতা সব্জির দাম বৃদ্ধি করে রেখেছিলেন। তাঁদের সতর্ক করা হয়। তার পর অনেকেই দাম কমিয়ে দেন। ক্রেতাদেরও অভিযোগ শোনেন আধিকারিকেরা। প্রশাসন সূত্রে খবর, দাঁড়িপাল্লায় কারচুপিও করেছেন কয়েক জন বিক্রেতা। যুগ্ম বিডিও নাজিমুল ইসলাম জানিয়েছেন, সব দিক খতিয়ে দেখছে কৃষি দফতর।

হুগলির বেশির ভাগ বাজারে গত দু’দিন ধরে আর নজরদারি চালানো হয়নি বলে দাবি করেছেন ক্রেতাদের বড় অংশ। তবে কিছু সব্জির দাম কিলোপ্রতি ১০-২০ টাকা করে কমেছে। আবার কিছু সব্জির দাম বেড়েছে। খুচরো বিক্রেতাদের দাবি, সব্জির জোগান কম থাকায় দাম বেশি। সোমবারও সরকারি ভাবে গাড়ি করে কাঁচা আনাজ বিক্রি করা হয়েছে। তারকেশ্বর ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে চালু করা হয়েছে সুফল বাংলা স্টল। গাড়িতে করে কম দামে আনাজ-সহ মুদিখানার জিনিসও বাড়ি বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে তারকেশ্বর ব্লক প্রশাসন। তারকেশ্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কৃষ্ণা অধিকারী বলেন, ‘‘এই প্রকল্পের কারণে ফড়েদের দৌরাত্ম্য কমবে। সুফল বাংলা স্টলে কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পারবেন।’’

পূর্ব মেদিনীপুরে ক্রেতাদের বড় অংশের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর জেলা জুড়ে এক দিনই নজরদারি অভিযান হয়েছিল। তাতে আনাজের দামের খুব একটা হেরফের হয়নি। আলু সেই ৩৫ টাকা কেজি, পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজি দরেই বিক্রি হচ্ছে। বেশির ভাগ সব্জির দরই ৬০ টাকার উপরে।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের বেশির ভাগ বাজারে গত ১১ জুলাই হানা দিয়েছিলেন টাস্ক ফোর্সের আধিকারিকেরা। এমনটাই দাবি করেছেন ক্রেতারা। তার পর কিছু সব্জির দাম কমলেও আবার বৃদ্ধি পেয়েছে। এক কেজি কাঁচা লঙ্কার দাম ছিল ১৫০ টাকা। তা মাঝে কমে ১২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছিল। এখন আবার তার দাম বেড়ে হয়েছে ১৫০ টাকা। পেঁয়াজের দাম পাঁচ টাকা কমে হয়েছে ৪৫ টাকা। এক কেজি রসুনের দাম ছিল ৩০০ টাকা। এখন তা কমে হয়েছে ২৫০ টাকা।

দক্ষিণ দিনাজপুরের পৌরসভা এলাকা হোক বা গ্রামীণ বাজার, কোন জায়গাতেই সে ভাবে টাস্ক ফোর্সের দেখা মেলেনি বলেই দাবি ক্রেতাদের বড় অংশের। তাঁদের অভিযোগ, বাজারদর এখনও ঊর্ধ্বমুখী। আলু, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, কাঁচালঙ্কা-সহ প্রায় সব সব্জির দাম আগের মতোই রয়েছে। পাইকারি বা খুচরো বাজারে দামের কোনও হেরফের হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement