তারাপীঠে মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
যা আশঙ্কা করা হয়েছিল, তাই ঘটল। পূর্ব ঘোষণা মতো মঙ্গলবার ভোর থেকে তারাপীঠ মন্দির দর্শনার্থীদের জন্য খুলল। এবং এত কড়াকড়ির পরেও মন্দিরে দর্শনার্থীদের পারস্পরিক দূরত্ব বিধি মানা কার্যত শিকেয় উঠল। গা ঘেঁষাঘেঁষি করে মন্দিরে ঢুকলেন বহু মানুষ। ঘোরাঘুরিও করলেন দল বেঁধে। সেই দলে ছেলে থেকে বুড়ো— সকলেই। যা আগামী দিনে মন্দির খোলা রাখা নিয়ে বীরভূম পুলিশ-প্রশাসন এবং মন্দির কমিটির কাছে যথেষ্ট ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এক পরিবারের অনেক সদস্য এক সঙ্গে পুজো দিতে এসে মা তারার দর্শন করেছেন। সেই জন্য মাঝেমাধ্যে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় থাকেনি।’’
সেই ১৬ মার্চ থেকে বন্ধ ছিল তারাপীঠ মন্দির। ৯৫ দিন পরে মন্দিরে ‘মা তারা’র গর্ভগৃহের দরজা ভোর সাড়ে পাঁচটায় মঙ্গল আরতির পরে সেবায়েত বামাচরণ মুখোপাধ্যায় দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে বাঁচতে একগুচ্ছ সুরক্ষা ব্যবস্থার ধাপ পেরিয়ে দর্শনার্থীরা ‘মা তারা’র দর্শন করছেন। বালিগঞ্জ থেকে ভাগলপুর, রায়গঞ্জ থেকে শান্তিপুর— এ রাজ্য এবং ভিন্ রাজ্য থেকে অনেক মানুষ ভোর থেকে চলে এসেছিলেন মন্দিরে।
গর্ভগৃহে অবশ্য কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বাইরে থেকে ‘মা তারা’কে দর্শন করতে গিয়ে ফুল, বেলপাতা, সিঁদুর, ফল, ধূপকাঠি, জবা, পদ্ম, নীল অপরাজিতা, করবী ফুলের মালা-সহ নানাবিধ উপকরণ দিয়ে সাজানো পুজোর ডালি সেবায়েতদের হাতে তুলে দিয়েছেন দর্শনার্থীরা। পুজো দিয়ে সেবায়েতরা ডালা ফেরত দিয়েছেন তাঁদের হাতে। বাইরে থেকে দেবীর দর্শন করা নিয়ে আক্ষেপ থাকলেও মন্দিরে প্রবেশ করতে পেরে সকলে এতটাই খুশি যে বলছেন, “হোক না বাইরে থেকে, এত দিন বাদে মায়ের দর্শন তো হল!”