প্রতীকী ছবি।
গত বছর পাড়ার দুর্গাপুজোয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাচে অংশগ্রহণ করেছিলেন দমদম নাগেরবাজারের বাসিন্দা, বছর আটত্রিশের নবনীতা চন্দ। ‘পি সি চন্দ্র মুগ্ধা নিবেদিত আনন্দবাজার পত্রিকা অদ্বিতীয়া’ প্রতিযোগিতায় সেই নাচের ভিডিয়োই পাঠিয়ে দিয়েছিলেন প্রাথমিক স্কুলের ওই শিক্ষিকা। তাঁর নাচ যে প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত হবে, তা ভাবতেই পারেননি নবনীতা। এই সুযোগ পেয়ে তিনি যেমন খুশি, তেমন উত্তেজিতও।
শুধু নবনীতাই নন, প্রতিযোগিতায় নৃত্য, সঙ্গীত ও আবৃত্তি— এই তিন বিভাগে অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই জানাচ্ছেন, এত বড় মঞ্চে তাঁরা আগে কখনও অনুষ্ঠান করার সুযোগ পাননি। তাই এক বার সুযোগ যখন পেয়েছেন, তখন ভাল কিছু করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিতে চান।
সুপ্ত প্রতিভাদের স্বীকৃতি দেওয়ার মঞ্চ হল ‘পি সি চন্দ্র মুগ্ধা নিবেদিত আনন্দবাজার পত্রিকা অদ্বিতীয়া’। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং নদিয়া জেলা নিয়ে গঠিত কলকাতা অঞ্চলের সেরাদের রোটারি সদনের একটি অনুষ্ঠানে নির্বাচিত করা হল বুধবার। এ দিনের সেরারা পরে প্রতিযোগিতার মূল পর্বে যোগ দেবেন। বিজ্ঞাপন দেখে প্রতিযোগিতায় যোগদানে আগ্রহীরা এক মিনিটের ভিডিয়ো করে পাঠিয়েছিলেন। সেখান থেকে প্রতিটি বিভাগে বেশ কয়েক জনকে বাছাই করা হয়েছিল আগেই।
কলকাতা আঞ্চলিক পর্বে সঙ্গীত বিভাগে নির্বাচিত হয়ে খুব খুশি বছর তিপান্নর গৃহবধূ স্মৃতিকণা অধিকারী। উত্তর কলকাতার নিমতলা লেনের বাসিন্দা স্মৃতিকণা বলেন, ‘‘ছোট থেকে গান গাই। কিন্তু প্রতিযোগিতায় কখনও নাম দেওয়া হয়নি। সাধারণ ঘরোয়া অনুষ্ঠানেই গেয়েছি। সাহস করে গানের ভিডিয়ো তুলে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। নির্বাচিত হওয়ার পরে ফোন পেয়ে ভাবছিলাম ঠিক শুনেছি তো?’’ স্মৃতিকণা জানান, সংসার সামলানোর ফাঁকেই নিয়মিত গানের চর্চা করেন তিনি। এই বিষয়ে স্বামী ও ছেলের সাহচর্য পেয়েছেন সব সময়ে। তিনি চান, ঘরোয়া আড্ডায় যে
প্রশংসা মিলেছে, তা যেন মঞ্চে গান গেয়েও মেলে।
বজবজের বছর ছাব্বিশের গৃহবধূ শুক্লা চক্রবর্তী নির্বাচিত হয়েছেন আবৃত্তি বিভাগে। শুক্লা জানান, আড়াই বছরের ছেলে রয়েছে তাঁর। কিন্তু দায়িত্বের ভারে আবৃত্তির চর্চা ছেড়ে দেননি। এখনও আবৃত্তি শিখতে যান তিনি। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণও করেন। কিন্তু এতবড় মঞ্চে আবৃত্তির সুযোগ এই প্রথম। শুক্লা বলেন, ‘‘এত বড় মঞ্চে ভাল ভাবে আবৃত্তি করে দেখাতে চাই। আঞ্চলিক পর্ব থেকে মূল পর্বে পৌঁছতে চাই। সংসার সামলে আবৃত্তিতে কেরিয়ার তৈরি করার স্বপ্ন অনেক দিনের। এই মঞ্চ হয়তো সেই স্বপ্ন ছুঁতে সাহায্য করবে।’’