সারা দেশে প্রকল্পটির নাম ‘আয়ুষ্মান ভারত’। তবে পশ্চিমবঙ্গে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ নামেই চলবে প্রধানমন্ত্রীর জন আরোগ্য যোজনার কাজ। এই বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্যের অর্থ দফতর। এই প্রকল্পের উপভোক্তারা বছরে পাঁচ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বিমার সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পে সারা দেশে যে-দশ কোটি পরিবারকে চিকিৎসা ভাতার অধীনে আনা হচ্ছে, তার মধ্যে থাকছে পশ্চিমবঙ্গের এক কোটি ১২ লক্ষ পরিবার। আর্থ-সামাজিক জাতি গণনা (সোশিও-ইকনমিক কাস্ট সেনসাস) অনুযায়ী এই এক কোটি ১২ লক্ষ পরিবারকে চিহ্নিত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এখন রাজ্যে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে ৪০ লক্ষ পরিবার দেড় লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা পায়। ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পটি ‘স্বাস্থ্যসাথী’র সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়ায় রাজ্যে দেড় কোটির বেশি পরিবার চিকিৎসা বিমার সুবিধা পাবে।
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, মূলত ‘হাইব্রিড’ পদ্ধতিতে এই প্রকল্পটি পরিচালনা করা হবে। স্বাস্থ্য দফতর নিজেরাই ট্রাস্ট তৈরি করে চিকিৎসা বিমার খরচ মেটাবে। বেসরকারি বিমা কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত তাদের মাধ্যমেও একাংশের বিমার প্রিমিয়াম মেটানো হবে। পরে সকলের চিকিৎসা খরচই মেটানো হবে রাজ্যের ট্রাস্ট থেকে। এত দিন ৪০ লক্ষ পরিবারের বার্ষিক প্রিমিয়ামের পুরো টাকা রাজ্য সরকারকেই মেটাতে হত। গড়ে এক-এক জনের প্রিমিয়াম দিতে হত ৫৮০ টাকা। কেন্দ্রীয় প্রকল্পে যোগ দেওয়ায় প্রায় সওয়া কোটি পরিবারের স্বাস্থ্য বিমার ৬০ শতাংশ টাকা দেবে কেন্দ্র। রাজ্য সরকার দেবে বাকি ৪০ শতাংশ। ফলে রাজ্যেও অনেক কম খরচে জেলা হাসপাতাল থেকে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে বেশি মানুষকে চিকিৎসা বিমার সুবিধা দেওয়া যাবে। বেসরকারি ক্ষেত্রেও এই সুবিধা মিলবে। কঠিন রোগের ক্ষেত্রেও বিমার সহযোগিতায় চিকিৎসার সুযোগ পাবেন সাধারণ মানুষ।
রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘রাজ্য যে নিজেদের নামেই প্রকল্প চালাবে, তা কেন্দ্রকে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারা তা মেনেও নিয়েছে। ফলে স্বাস্থ্যসাথী নামে প্রকল্প চালাতে বাধা থাকছে না।’’ স্বাস্থ্যসাথীতে এখন মেলে দেড় লক্ষ টাকার সুবিধা। তাতে কেন্দ্রীয় প্রকল্প মিশে যাওয়ায় সেটা বেড়ে হচ্ছে পাঁচ লক্ষ টাকা। রাজ্যের সঙ্গে নীতি আয়োগের চুক্তিতে প্রকল্পটির নাম ‘আয়ুষ্মান-স্বাস্থ্যসাথী’। যদিও রাজ্যের বিজ্ঞপ্তিতে তার উল্লেখ করা হয়নি।
পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, ওড়িশা সরকার নিজস্ব স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্প চালায়। কোনও কোনও রাজ্যে বিমাকৃত রাশির পরিমাণ বাংলার থেকে অনেক বেশি। ওড়িশা এখনও ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পে যোগ দেয়নি। সে-দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ কেন্দ্রের টাকা এবং নিজেদের প্রকল্পের নাম জুড়ে দিয়ে অভিনব উপায়ে প্রকল্পটি চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।