শুভেন্দু অধিকারী ফাইল ছবি
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রাজনীতিতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে কোণঠাসা করার চেষ্টা অব্যাহত। এ বার তমলুক ঘাটাল সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক থেকে তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ গোপাল মাইতিকে সরানোর উদ্যোগ শুরু হয়েছে। মৎস্যমন্ত্রী তথা রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরির কথায়, ‘‘১৪ জন ডিরেক্টরের মধ্যে পাঁচ জনের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। আর তিন জনের সমর্থন পেলেই আমরা চেয়ারম্যানকে সরাতে পারব। আলোচনা অতি দ্রুততার সঙ্গে এগোচ্ছে।’’
মেদিনীপুর জেলায় সমবায় রাজনীতিতে অধিকারী পরিবারের প্রভাব যথেষ্ট। প্রায় তিন দশক ধরে সমবায় রাজনীতিতে প্রভাব দেখিয়ে এসেছে তারা। তৃণমূল ছেড়ে শুভেন্দুর বিজেপি গমন এবং রাজ্যের বিধানসভা ভোটে বিজেপি-কে প্রবল ভাবে পরাভূত করে তৃণমূলের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শুভেন্দু এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ ও অনুগামীদের বিভিন্ন সমবায় ব্যাঙ্কের পদ থেকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে খোদ শুভেন্দুকেও সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাজ্য সমবায় দফতর। এ বার কোপ পড়তে চলেছে তাঁর অনুগামীদের উপর।
গোপালকে সরানোর উদ্যোগ সম্পর্কে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের এক নেতার দাবি, ‘‘নিজে তমলুক ঘাটাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদে না থাকলেও গোপালকে দিয়ে নিজস্ব প্রভাব বিস্তার করাতেন বিরোধী দলনেতা। তাই তাঁর প্রভাব থেকে এই সমবায় ব্যাঙ্ককে মুক্ত করতে আমরা বিশেষভাবে উদ্যোগী হয়েছি।’’
এই মুহূর্তে মেদিনীপুর জেলার তিনটি সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন শুভেন্দু। কাঁথি ছাড়াও বিদ্যাসাগর সমবায় ব্যাঙ্ক ও কাঁথি কার্ড সমবায় ব্যাঙ্কেরও চেয়ারম্যান তিনি। এই সব ক'টি ব্যাঙ্ক থেকেই যাতে তাঁকে অতি দ্রুত সরানো যায়, সে ব্যাপারে রাজ্যের শাসকদল রাজ্য সমবায় দফতরের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে। পাশাপাশি, শুভেন্দুর অনুগামীদের যাতে বিভিন্ন লাভজনক পদ থেকে সরানো যায় সে বিষয়েও আগ্রাসী পদক্ষেপ নিতে চাইছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব। এর আগে পশ্চিমবঙ্গ সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্টের সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে শুভেন্দু-অনুগামী শ্রীধর মিশ্রকে। আর গত সপ্তাহেই তমলুকের তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতির সভাপতি পদ থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে বিরোধী দলনেতাকে। পূর্ব মেদিনীপুরের পাশাপাশিই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিদ্যাসাগর সমবায় ব্যাঙ্ক থেকেও যাতে শুভেন্দুকে সরানো যায়, সেই বিষয়েই পদক্ষেপ করেছেন শাসকদলের জেলার নেতারা।