গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বিধানসভা নির্বাচনের জন্য দীর্ঘ বিরতির পরে রাজ্য বিজেপি-র কার্যকারিণী বৈঠক হতে চলেছে ২৯ জুন। তবে এই প্রথম সেই বৈঠক অন্যরকম ‘তাৎপর্য’ পেতে চলেছে বলে বিজেপি সূত্রের খবর। বিজেপি-র সংবিধান অনুসারে ওই বৈঠকে প্রধান বক্তাদের তালিকায় থাকতে পারেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় এই প্রথম প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পেয়েছে বিজেপি। ফলে এই প্রথম পদাধিকার বলে ওই বৈঠকে বক্তা হতে চলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
কার্যকারিণী বৈঠকে সাধারণত দলের কোনও সাংগঠনিক রদবদলের সিদ্ধান্ত হয় না। তবে নেতৃত্ব চাইলে কোনও বিশেষ ঘোষণা করতে পারেন। বিজেপি সূত্রের খবর, বিধানসভা নির্বাচনে আশানুরূপ ফল না হওয়ার পরে দলীয় সংগঠনের যে বিপর্যস্ত চেহারা, তার মেরামতি এবং পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করাই হবে এই বৈঠকের মূল আলোচ্য।
দলের নিয়ম অনুযায়ী প্রতি ৩-৪ মাস অন্তর কার্যকারিণী বৈঠক হতে পারে। তবে তার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। বাংলায় অতীতে এক বছরে একাধিক বার সেই বৈঠক হলেও বিধানসভা নির্বাচন ও করোনা পরিস্থিতিতে অনেক দিন কার্যকারিণী বৈঠক হয়নি। এ বারের বৈঠকে দলের প্রথম সারির নেতারা একই সঙ্গে আলোচনায় কলকাতার হেস্টিংসে দলীয় দফতরে। বাকি জেলা স্তরের প্রতিনিধিরা ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠকে হাজির থাকবেন। কী ভাবে তা পরিচালনা করা হবে, তা ঠিক করতে সোমবার সন্ধ্যাতেই রাজ্য বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদকরা বৈঠকে বসেছিলেন। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা এ বারের কার্যকারিণী বৈঠকের প্রথম বক্তা হবেন। এর পর বক্তৃতা করার কথা রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও শুভেন্দুর। পাশাপাশি দলের আগামী কর্মসূচি কী হবে তা রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী ঘোষণা করবেন বলে ঠিক হয়েছে।
বিজেপি-র নিয়ম অনুযায়ী এই বৈঠকে দলের তিনটি প্রস্তাব পেশ করতে হয়। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রস্তাব তৈরি ও পেশ করার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে রাজ্য স্তরের তিন নেতাকে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৯ জুন বেলা ১১টায় শুরু হবে বৈঠক। চলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত। সবই নিয়ম মাফিক হলেও কার্যকারিণী বৈঠকের ‘প্রধান আকর্ষণ’ হতে চলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুই। বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর দলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী বৈঠকে যোগ দিয়েছেন শুভেন্দু। কিন্তু দলের সংবিধান অনুযায়ী রাজ্য কমিটির সদস্য না হওয়া সত্বেও বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হিসেবে কোনও সাংগঠনিক বৈঠকে এই প্রথম তাঁর থাকার ও দলের পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে বক্তৃতা করার কথা।
শুভেন্দু থাকলেও দলের বাকি বিধায়করা সকলে ওই বৈঠকে ডাক পাচ্ছেন না। কারণ, তাঁরা সকলে রাজ্য কার্যকারিণীর সদস্য নয়। দু’বারের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা অবশ্য ২০১৬ সাল থেকেই সদস্য রয়েছেন। রাজ্য কমিটির পদাধিকারী নন এমন সাংসদরাও এই বৈঠকে থাকবেন। কারণ, সব সাংসদই কার্যকারিণী সমিতির সদস্য। সেই সঙ্গে থাকবেন দলের বিভিন্ন শাখা সংগঠনের রাজ্য ও জেলা স্তরের নেতারা।