শুক্রবার নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারী। দেখা গেল না শনিবার।
শনিবার সকাল ১১টা থেকে রাত পর্যন্ত রাজ্যে রইলেন জেপি নড্ডা। আর পুরো সময়টাই তাঁর গায়ে গায়ে সেঁটে রইলেন রাজ্য বিজেপি-র প্রথম সারির সব নেতা। কৈলাস বিজয়বর্গীয় থেকে দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায় থেকে রাহুল সিংহ, বাবুল সুপ্রিয় থেকে লকেট চট্টোপাধ্যায়— সকলেই ছিলেন কোথাও না কোথাও। শুধু দেখা গেল না অধুনা রাজ্য বিজেপি-র ‘পোস্টারবয়’ শুভেন্দু অধিকারীকে।
নড্ডার সফরে শুভেন্দুর অনুপস্থিতি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে চর্চা শুরু হয়েছে। তেমনই প্রশ্ন উঠেছে রাজ্য বিজেপি-র একাংশেও। তবে এটাও ঠিক যে, শনিবারের কোনও কর্মসূচিতেই শুভেন্দুর থাকার কথা ছিল না। কিন্তু পাশাপাশিই তাঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ১৯ ডিসেম্বর অমিত শাহর হাত থেকে বিজেপি-র পতাকা নেওয়ার পরে দলের সব বড় কর্মসূচিতেই ছিলেন শুভেন্দু। সেই কারণেই শনিবার তাঁকে না দেখতে পাওয়ায় আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গত, বর্ধমানে নড্ডার কর্মসূচিতে শুভেন্দুর যোগ দেওয়ার কথা না থাকলেও শনিবার বর্ধমান শহরে অনেক জায়গাতেই তাঁর পোস্টার ও কাট আউট দেখা গিয়েছে।
কাটোয়ায় নড্ডার সমাবেশ মঞ্চে ছিলেন রাজ্য বিজেপির নেতারা।
ঘটনাচক্রে, শনিবার শুভেন্দু নড্ডার সফরে না থাকায় বিজেপি সভাপতির সঙ্গে প্রকাশ্যে তাঁর মুখোমুখি সাক্ষাৎও এখনও পর্যন্ত হয়ে উঠল না। বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর এখনও পর্যন্ত দিল্লি যাননি শুভেন্দু। যাননি বিজেপি-র সদর দফতরেও। ফলে সেখানেও তাঁর সঙ্গে নড্ডার দেখা হয়নি। নড্ডার সফর নিয়ে রাজ্য বিজেপি-র প্রায় সব নেতা টুইট করলেও শুভেন্দু রাত পর্যন্ত কোনও টুইটও করেননি।
শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠদের অবশ্য বক্তব্য, শুক্রবার নন্দীগ্রামের সমাবেশ সফল করার জন্য গত কয়েকদিন খুব ব্যস্ত ছিলেন শুভেন্দু। এর পর রবিবার পুরুলিয়ার কাশীপুরে রয়েছে সমাবেশ। তার প্রস্তুতিও চলেছে। এ সবের জন্যই শনিবার তিনি পূর্ব বর্ধমানে যাননি। দুপুর পর্যন্ত তিনি কাঁথির বাড়িতেই ছিলেন। এ দিন তাঁর কোনও কর্মসূচি ছিল না। রাজ্য বিজেপি-র একটি সূত্রের আবার দাবি, রবিবার পুরুলিয়ায় শুভেন্দুর সভায় অনেকে যোগদান করতে পারেন। কাশীপুরের তৃণমূল বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়ার শিবিরের অনেকেই না কি বিজেপিতে যোগ দিতে চান। কিন্তু তা নিয়ে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের আপত্তি রয়েছে। সেই সব ‘ম্যানেজ’ করার জন্যই শুভেন্দু শনিবার দিনভর ব্যস্ত ছিলেন কি না, তা জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: অক্সফোর্ডের টিকা দ্রুত ব্রাজিলে পাঠাতে মোদীকে আর্জি প্রেসিডেন্ট বোলসোনারোর
আরও পড়ুন: ভারতে তৈরি দু’টি ভ্যাকসিন মানবজাতিকে রক্ষা করতে পারে, দাবি মোদীর
তবে শুক্রবার নন্দীগ্রামের সমাবেশ নিয়ে বিজেপি-র একাংশে অসন্তোষ রয়েছে। নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ে রাজ্য বিজেপি-র চার বড় মুখ শুভেন্দু, দিলীপ, মুকুল, কৈলাস সকলেই নন্দীগ্রামের সভায় থাকলেও ইট-পাটকেল বৃষ্টি এবং ‘চোর-চোর’ স্লোগানে একটা সময় কার্যত দক্ষযজ্ঞ বেধে যায়। বিশৃঙ্খলা এমন জায়গায় পৌঁছয় যে, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে আসা নেতা-কর্মীদের যোগদান পর্বও নম-নম করে সারতে হয়। ঘটনাচক্রে, তার পরদিনই দলের সভাপতির সফরে শুভেন্দুকে দেখা গেল না। জল্পনা সে কারণেই। আলোচনাও সেই জন্যই।