ফাইল চিত্র।
তবে কি প্রধানমন্ত্রীর নাম শোনার পরই নীরবতা ভাঙল পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর! জল্পনা শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরেই।
তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের এক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এই প্রথম মুখ খুলেছেন শুভেন্দু। এক কর্মী ওই গ্রুপে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার উপভোক্তাদের ফর্ম পূরণের কথা জানিয়েছিলেন। কতক্ষণ ধরে ফর্ম পূরণ হয়েছে, কোথায় হয়েছে, সেই সময়ে কে কে ছিলেন, ওই পোস্টে তারও উল্লেখ করেন ওই নেতা। এরপরই গ্রুপে সরব হন শুভেন্দু। ওই কর্মীর ভুল ধরিয়ে দেন তিনি। ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’ নয়। শহরে যে এই প্রকল্পের নাম ‘হাউস ফর অল’ তা বুঝিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু। শুধু তাই নয়। এই প্রকল্পে কেন্দ্র এবং রাজ্য কত টাকা দেয় এবং উপভোক্তাকে কত টাকা দিতে হয়, পোস্টে শুভেন্দু তা-ও উল্লেখ করেছেন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। খড়্গপুর শহর ‘পুনরুদ্ধারে’ দলের তরফে নিযুক্ত এ জেলার পর্যবেক্ষক শুভেন্দুর নির্দেশে এক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়েছে। দলের এক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর গত ১৭ জুন মেদিনীপুরে দলের এক বৈঠকে এই গ্রুপ খোলার কথা প্রথম ঘোষণা করেছিলেন শুভেন্দু। তিনি জানিয়েছিলেন, ওয়ার্ড- ভিত্তিক পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হবে। পর্যবেক্ষকদের নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হবে। বৈঠকে শুভেন্দুকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘খড়্গপুরে কয়েকজন বাছাই করা নেতাকে আমার চাই। আমি ৩৫টা ওয়ার্ডে পর্যবেক্ষক করব।’’ পরে বাছাই করা নেতাদের নাম, ফোন নম্বর শুভেন্দুকে দেওয়া হয়েছিল। শুভেন্দু ওয়ার্ড- ভিত্তিক পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছেন। সেই পর্যবেক্ষকদের নিয়ে খোলা হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। নাম দেওয়া হয়েছে ‘খড়্গপুর পর্যবেক্ষক’। সেখানে এতদিন ছবি, তথ্য দেন পর্যবেক্ষকেরা। তৃণমূল সূত্রের খবর, শুভেন্দু সে সব দেখলেও (সিন) গ্রুপে কোনও মন্তব্য করতেন না। গ্রুপে জোড়ার পরে শুভেন্দুর শুধু মন্তব্য ছিল, ‘ওয়েলকাম’। ব্যস ওইটুকুই। কিন্তু সম্প্রতি একদিন ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’ সংক্রান্ত পোস্ট করেন ওই তৃণমূল কর্মী। ওই দিন রাত ১০টা ৪০ মিনিট নাগাদ পোস্ট করে ভুল সংশোধন করে দেন শুভেন্দু। স্বাভাবিক ভাবে তৃণমূলের অন্দরে শুরু হয়েছে গিয়েছে জল্পনা। তবে কি প্রধানমন্ত্রীর নাম দেখেই অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন শুভেন্দু!
তৃণমূলের একাংশের অবশ্য ব্যাখ্যা, কর্মীর এমন ভুলে জেলা পর্যবেক্ষক হিসেবে ‘রাগ’ হওয়ারই কথা শুভেন্দুর। কারণ, সম্প্রতি ডেবরার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, আবাস যোজনায় যদি বাংলা শব্দটির উল্লেখ না থাকে সেক্ষেত্রে তিনি এ বারে ব্যবস্থা নেবেন। শুধু মুখ্যমন্ত্রী নন। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নাম এ রাজ্যে কেন বাংলা আবাস যোজনা, দিন কয়েক আগে জেলার এক সমাবেশেই তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন শুভেন্দু। সমাবেশে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘বাংলা আবাস যোজনা রয়েছে। ওরা বলছে, এখানে (পশ্চিমবঙ্গে) না কি নাম পাল্টে দেওয়া হয়েছে। ওটা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা হবে। শুনে রাখুন, ওই বাড়ির ৭৫ টাকা দিদির। ২৫ টাকা মোদীর। তাই নাম বাংলা আবাস যোজনা। ২৫ টাকা দিয়ে তোমার (মোদীর) নাম লেখা যাবে না!’’
খড়্গপুরে পুনরুদ্ধারে একের পর এক কর্মসূচি করছেন শুভেন্দু। আজ, শনিবারও তৃণমূলের পক্ষ থেকে শহরের টাউন হলে বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার কথা তাঁর। আর রবিবার শহরে বেশ কয়েকটি বাতানুকূল বাস উদ্বোধন করবেন। নাগাড়ে প্রচার চলছে। তার পরেও ভুল! কর্মীদের মধ্যেই যদি ধোঁয়াশা থাকে তা হলে তো পরিশ্রমই বৃথা। তৃণমূলের একাংশের ব্যাখ্যা, সম্ভবত এই অনুভূতি থেকেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শুভেন্দু। এখানে প্রধানমন্ত্রীর নামের প্রসঙ্গটি অর্থহীন।