—নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রের বিনামূল্যে দেওয়া করোনা ভ্যাকসিন ‘কোভিশিল্ড’-কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘টিকাশ্রী’ নাম দিয়ে নিজের নামে চালিয়ে দিতে পারেন! রবিবার পুরুলিয়ার কাশীপুরের এক পথসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ ভাবেই কটাক্ষ করলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সদ্য বিজেপি-তে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী।
রবিবার কাশীপুর ব্লক সদরের হাটতলা মোড়ে পথসভা ছিল পুরুলিয়া জেলা বিজেপি-র। এই সভায় নিজের ভাষণে শুভেন্দু বলেন, ‘‘মোদিজির সরকার গোটা ভারতবর্ষে বিনামূল্যে কোভিড ভ্যাকসিন দেবে। আজ দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী সকলকে চিঠি দিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, আমরা বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পৌঁছে দেব।’’ সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘আমি তো ভাবছিলাম এটা ‘টিকাশ্রী’ নাম দিয়ে আবার নিজের নামেই না চালিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী! পিএমএওয়াই-কে যেমন বাংলা আবাস যোজনার নামে চালিয়ে দিয়েছেন তিনি। প্রতারক, ঠগবাজ এই সরকারকে তুলে ছুঁড়ে ফেলে দিতে হবে।’’
তবে রবিবার কাশীপুরে শুভেন্দুর এই সভা ঘিরে রীতিমতো ঝামেলা হল। রবিবার পুরুলিয়ার কাশীপুরের নপাড়া থেকে পূর্বঘোষিত রোড শো শুরু হয়। তার পর কাশীপুর চৌমাথা মোড়ে একটি পথসভা হয়। বিজেপি-র অভিযোগ, কাশীপুরে যে দু’টি মাঠ রয়েছে, তার কোনওটাতেই বিজেপি-র সভার জন্য অনুমতি দেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। ফলে পথসভা করতে হয়েছে। রবিবার এই অনুষ্ঠানের জন্য সে ভাবে পুলিশকর্মী মোতায়েন ছিল না। বিকেল ৩টে থেকে বিজেপি-র রোড শো শুরু হয়। তার পর একটি পথসভা হয়। যার জেরে অবরুদ্ধ হয়ে যায় কাশীপুর থেকে পুরুলিয়া, আদ্রা এবং বাঁকুড়া সড়ক।
আরও পড়ুন: ফুরফুরা রাজনীতি: কংগ্রেসের জোট প্রস্তাবে একগুচ্ছ শর্ত আব্বাসের
আরও পড়ুন: শোভন-বৈশাখী অবশেষে বিজেপি দফতরে, স্বাগত জানাতে একা শঙ্কু
শুভেন্দুর পথসভার মাঝে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে তৃণমূলের ঝামেলা। —নিজস্ব চিত্র।
সভামঞ্চে পুরুলিয়ার বিধায়ক, সাংসদের বক্তব্যের শেষে শুভেন্দু অধিকারী সবেমাত্র মাইক হাতে তুলে নিয়েছেন, সে সময় কাশীপুর থানার দিক থেকে দ্রুত হর্ন বাজিয়ে একটি ছোট কালো গাড়ি সভাস্থলে ঢুকে পড়ে। সভার তাল কেটে যাওয়ায় বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা উঠে দাঁড়ান। ওই গাড়ি থামিয়ে চালকের উল্টোদিকে বসা কাশীপুর বিধানসভার আদ্রা শহর তৃণমূলের সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবে গাড়ি থেকে তৃণমূলের পতাকা হাতে নেমে স্লোগান দিতে থাকেন। গাড়ি থেকে নামেন আরও তিন জন। সভায় শুরু হয় বিশৃঙ্খলা।
ওই ডামাডোলের মধ্যে মাইক হাতে নিজের পরিচয় দিতে শুরু করেন গাড়িতে করে আসা ওই তৃণমূল নেতা। পথ না আটকে তাঁর গাড়িকে ছেড়ে দিতে বলেন তিনি। অভিযোগ, এর পরেই কয়েক জন বিজেপি কর্মীকে ধাক্কা দিতে শুরু করেন ধন়ঞ্জয়। শুরু হয় পাল্টা ধাক্কাধাক্কি। লাঠি, ইট-পাথর দিয়ে মারধর-সহ তৃণমূল নেতার গা়ড়িতে ভাঙচুর করা হয় বলেও অভিযোগ। তিনি যাতে জনরোষের শিকার না হন, সে জন্য ওই গাড়িতে থাকা ব্যক্তিদের ফের গাড়িতে তুলে দিয়ে সেখান থেকে চলে যেতে সাহায্য করা হয়। সে সময়কার মতো বিশৃঙ্খলা থেমে গেলেও এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন শুভেন্দু। পুলিশের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আগাম অনুমতি নিয়ে এই সভা করলেও কোনও পুলিশ দেখা গেল না। পুলিশ থাকলে এ রকম পরিকল্পিত ঘটনা ঘটত না।’’
রবিবারের এই ঘটনার পর সভাভঙ্গ হয়ে যায়। কমতে থাকে ভিড়। তবে তার মধ্যেই নিজের ভাষণ শুরু করেন শুভেন্দু।