বিধানসভায় সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য সরকারের লিখে দেওয়া ভাষণে সত্যের অভাব ছিল। সে কারণেই বিজেপি বিধায়করা বাধা দিয়েছেন। শুক্রবার বিধানসভা অধিবেশনের শুরুতে রাজ্যপালের ভাষণে বাধা প্রসঙ্গে এমনটাই দাবি করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘ভোট পরবর্তী হিংসার উল্লেখই ছিল না রাজ্যপালের ভাষণে। তৃণমূলের গুন্ডা ও নিষ্ক্রিয় পুলিশের ভূমিকার উল্লেখ নেই। সেই কারণেই আমরা বাধা দিয়েছি।’’ তিনি আরও দাবি করেন, ‘‘ভাষণের কোথাও হিংসার উল্লেখ নেই। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এসেছে। হাইকোর্টের টিপ্পনি রয়েছে। ৯০০০ এফ আই আর হয়েছে। সাড়ে ৭ হাজার বাড়ি পুড়িয়েছে। লাখ লাখ মানুষ ও ভোটার ঘরছাড়া।’’ তবে রাজ্যপাল কেন ভাষণ সম্পূর্ণ করেননি, সে ব্যাপারে তাঁর জবাব, ‘‘এর উত্তর মহামহিম রাজ্যপালই দিতে পারবেন।’’
শুক্রবার কয়েক মিনিটের ভাষণের মধ্যেও একবার থামতে হয় রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে। বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণ শুরু হয় ঠিক দুপুর ২টোয়। আর ধনখড় বিধানসভা ছেড়ে চলে যান ২টো ৮ মিনিট নাগাদ। মাঝের সময়টুকুতে ভাষণ দিতে গিয়ে তুমুল বাধার মুখে পড়েন তিনি। শুরু হতে না হতেই বিজেপি বিধায়করা আসন ছেড়ে ওয়েলে নেমে আসেন। হাতে ছিল ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে পোস্টার ও ছবি। ভাষণ শুরুর এক মিনিটের মধ্যে থেমে যেতে হয় ধনখড়কে। পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপাল স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেন। এর পরে স্পিকার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। ২টো ৪ মিনিট নাগাদ রাজ্যপাল ফের ভাষণ শুরু করলেও বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে। এর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ভাষণ শেষ করে দেন।
পরে সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু বলেন, ‘‘রাজ্যপাল সংবেদনশীল মানুষ। তিনি ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস পরিস্থিতি দেখতে শীতলকুচি, নন্দীগ্রামে গিয়েছিলেন। তাঁকে আটকাতেই রাজ্যে লকডাউন ঘোষণা করা হয়।’’ একই সঙ্গে রাজ্যপালের ভাষণ প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের লিখে দেওয়া ভাষণে অনেক কিছুই ছিল না। রাজ্যে ৪১ জন বিজেপি কর্মী নিহত হয়েছেন। মহিলাদের উপরে অত্যাচার হয়েছে। সে সবই আমরা বিধানসভায় তুলে ধরেছি। স্লোগানের মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছি।’’ বিধানসভায় বিক্ষোভ প্রদর্শন নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ভোট পরবতী হিংসা নিয়ে একটি লাইনও যদি ভাষণে লেখা হত, তদন্ত করার কথা বল হত, তবে আমরা দায়িত্বশীল বিরোধীর ভূমিকা পালন করতাম।’’শুভেন্দু জানিয়েছেন, বিধানসভার বিজনেস অ্যাডভাইসরি কমিটির বৈঠকেও ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে আলোচনা চাইবে বিজেপি পরিষদীয় দল।