শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
‘বঞ্চনা’ থেকে ‘উত্তরণের খোঁজ’ পেতে এ বার উত্তরবঙ্গে সম্মেলন করতে চলেছে রাজ্য বিজেপি। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় সাংবাদিক বৈঠক করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁদের এই কর্মসূচির কথা জানান। চা বাগানের শ্রমিক এবং পিছিয়ে থাকা জনজাতিদের নিয়ে হতে চলা এই সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন একাধিক বিজেপি বিধায়ক এবং অন্য শীর্ষনেতারা। আগামী মঙ্গলবার শিলিগুড়ির একটি হলে সম্মেলনটি হওয়ার কথা।
উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে, আগামী মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে তাঁরও একটি প্রশাসনিক সভা করার কথা। নিজের বক্তব্যে সেই প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন শুভেন্দু। বলেন, “ওই দিন যখন শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী খেলা বন্ধ করে প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গালাগালি করবেন, তখন আমরা এই সম্মেলন চালিয়ে যাব।” শুভেন্দু জানান, এই দেড়-দু’ঘণ্টার সভায় মুখ্য বক্তা হিসাবে থাকবেন বালুরঘাটের বিধায়ক তথা অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ী। সম্মেলনটির আয়োজন এবং ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকছেন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। এ ছাড়াও বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়, মালতী রাভা রায়ের মতো উত্তরবঙ্গের বিধায়কেরাও এই সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন বলে জানান বিরোধী দলনেতা। সম্মেলনটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘উত্তরের উত্তরণের খোঁজে’।
কী ভাবে উত্তরবঙ্গকে বঞ্চিত করা হয়েছে, পাহাড়ে জনজাতিদের জন্য একাধিক উন্নয়ন বোর্ড গড়েও প্রকৃত উন্নয়নের ‘কী হাল’, সেই সব কিছু সম্মেলন থেকে তুলে ধরা হবে বলে জানান শুভেন্দু। তার আগেই অবশ্য কৃষিক্ষেত্রে দুর্নীতি নিয়ে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। কৃষকদের থেকেও ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগে বিদ্ধ করেন তৃণমূলকে। অভিযোগ করেন যে, অতিরিক্ত দামে চাষিদের ইউরিয়া সার কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে।
তবে জনজাতি এবং চা শ্রমিকদের নিয়ে বিজেপির এই সম্মেলনকে রাজনৈতিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। বছর ঘুরলে লোকসভা নির্বাচন। ২০১৯ সালে উত্তরবঙ্গে বিজেপি যে রাজনৈতিক সাফল্য পেয়েছিল, তাতে চা শ্রমিক এবং জনজাতি সমাজের বড় ভূমিকা ছিল বলে অনেকেই মনে করেন। আবার ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন এবং সম্প্রতি হয়ে যাওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনেও বিজেপির এই ‘ভোটব্যাঙ্কে’ ফাটল ধরার ইঙ্গিত মিলেছে। এই আবহে নিজেদের রাজনৈতিক জমি ফেরাতেই বঞ্চনার অভিযোগ তুলে শিলিগুড়িতে বিজেপি সম্মেলন করতে চাইছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে অবশ্য বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি শাসক তৃণমূল। কুমারগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক তোরাফ হোসেন মণ্ডল বলেন, “রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আসার পর উত্তরবঙ্গে বহু উন্নয়ন হয়েছে। আগামিদিনেও হবে। ভোট এলেই বিজেপির উত্তরবঙ্গের কথা মনে পড়ে।”