শুভেন্দু অধিকারীর টুইট আক্রমণ পরেশ অধিকারীকে। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে নিয়ে ক্রমেই বিড়ম্বনা বাড়ছে শাসক দল তৃণমূল। এ বার সেই বিড়ম্বনা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার সন্ধ্যায় পরপর পাঁচটি টুইট করেন তিনি। সেই টুইটেই পরেশের পরিবারের ৩১ জন সদস্যদের নামের তালিকা প্রকাশ করেন তিনি। তাঁরা কে কোথায় কর্মরত রয়েছেন তা-ও নিজের টুইটে উল্লেখ করেছেন শুভেন্দু।
পরেশ বাম আমলে রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের মন্ত্রী ছিলেন। বিজেপি অভিযোগ করেছিল, ওই সময় থেকে শুরু করে তার আগে ও পরে পরেশের আত্মীয়েরা চাকরি পেয়েছেন। তার মধ্যে খাদ্য দফতরও রয়েছে। ২০১৮ সালে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়িয়ে পরাজিত হন পরেশ। কিন্তু ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে জিতে মন্ত্রী হন। দুর্নীতির আশ্রয়ে নিজের মেয়েকে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে পরেশের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। আদালতের রায়ে তাঁর মেয়ের চাকরি গিয়েছে। এমনকি চার বছর ধরে পাওয়া বেতনও ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এমন অবস্থায় পরেশের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হয় বিরোধীরা। এর মধ্যে পরেশের ‘আত্মীয়েরা চাকরি পেয়েছেন’ বলে একটি ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হয়। তাতে উল্লেখ করা হয়েছিল ২৫ জনের নাম।
কিন্তু শুভেন্দু যে তালিকা প্রকাশ করেছেন, তাতে মোট ৩১ জনের নাম রয়েছে। শুভেন্দুর তালিকা অনুযায়ী, পরেশের স্ত্রী মীরা অধিকারী (স্বাস্থ্য দফতর),মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী (শিক্ষিকা),ছেলে হীরকজ্যোতি অধিকারী (ডাক্তার),ভাই অখিল অধিকারী (করণিক),ভ্রাতৃবধূ সাধনা অধিকারী (স্বাস্থ্য দফতর),ভাইঝিকরমুক্তা অধিকারী (প্রাথমিক শিক্ষিকা),ভাইঝি লতা অধিকারী মণ্ডল (খাদ্য দফতর), ভাইপো বেন্টু অধিকারী (স্কুলের করণিক),ভাইপো সেন্টু অধিকারী (প্রাথমিক শিক্ষক), ভাইপো হরিপদ অধিকারী (প্রাথমিক শিক্ষক), ভাইপো জয়দেব অধিকারী (খাদ্য দফতর), বোন ছায়া অধিকারী (অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী), বোন মায়া অধিকারী (অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী), বোনের জামাই শৈলেন দাস (শিক্ষক), বোনের জামাই শ্যামল সরকার (শিক্ষক), শ্যালিকার মেয়ে নূপুর রায় বর্মণ(প্রাথমিক শিক্ষিকা),শ্যালিকার ছেলে রামমোহন রায় (খাদ্য দফতর), শ্যালিকার মেয়েরস্বামী হরিশ্চন্দ্র রায় (হাই স্কুলের শিক্ষক), শ্যালকের ছেলে সরেন রায় (প্রাথমিক শিক্ষক), শ্যালকের ছেলের বউ পর্ণা সরকার রায় (প্রাথমিক শিক্ষিকা), শ্যালক মনোরঞ্জন রায় (কলকাতা পুলিশ), শ্যালক উদ্ভব রায় (বিডিও অফিস), শ্যালিকা হীরা রায় (পূর্ত), শ্যালিকা মায়া রায় (অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী), মামাতো ভাই নিরঞ্জন রায় (কৃষি দফতর), পিসতুতো ভাই ভবেশ্বর রায় (প্রাথমিক শিক্ষক), ভবেশ্বর রায়ের দুই মেয়ে (প্রাথমিকশিক্ষক), শ্যালিকার ছেলে মৃণাল রায় (প্রাথমিক শিক্ষক), মৃনালের স্ত্রী (প্রাথমিক শিক্ষক), গাড়িচালক পিন্টু অধিকারী (খাদ্য দফতর), গাড়িচালক দ্বিজেন বর্মণ (খাদ্য দফতর)। শুভেন্দুর যাঁদের নাম লিখেছেন, তাঁরা কে কোথায় আদৌ চাকরি করেন কি না, আনন্দবাজার অনলাইন তা খতিয়ে দেখেনি।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “বিরোধীরা কিছু ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে। এর মধ্যে রাজনীতি ছাড়া কিছু নেই।”