Suvendu Adhikari Rally

বারুইপুরের জনসভা থেকে পুলিশ সুপারকে হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর, সভা শেষে হাঁটলেন ভেস্তে যাওয়া রুটে

গত ১৯ মার্চ বারুইপুরে যে রাস্তায় মিছিল করতে পারেননি শুভেন্দু, বৃহস্পতিবার সভা শেষে সেই রাস্তাতেই দলবল নিয়ে হাঁটলেন। তার পর জেলা বিজেপির কার্যালয়ে কিছু ক্ষণ বসেও রইলেন কর্মীদের ‘নিরাপদে’ বাড়ি ফেরার খবর নিয়ে এলাকা ছাড়বেন বলে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৫ ২০:৩০
Share:
Suvendu Adhikari holds rally near Baruipur SP Office, Warns Police of consequences

বারুইপুর পুলিশ জেলার এসপি অফিসের অদূরে শুভেন্দুদের জনসভা। —নিজস্ব চিত্র।

বারুইপুর পুলিশ জেলার এসপি অফিসের কাছে মঞ্চ বেঁধে পুলিশ সুপারের নাম করে হুঁশিয়ারি দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। বারুইপুরের জনসভা থেকে বিরোধী দলনেতার মন্তব্য, ‘‘পলাশ ঢালি (বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার)-রা ইতিহাস হয়ে যাবেন।’’ গত ১৯ মার্চ বারুইপুরে যে রাস্তায় মিছিল করতে পারেননি তিনি, বৃহস্পতিবার সভা শেষে সেই রাস্তাতেই দলবল নিয়ে হাঁটলেন। তার পর জেলা বিজেপির কার্যালয়ে কিছু ক্ষণ বসেও রইলেন কর্মীদের ‘নিরাপদে’ বাড়ি ফেরার খবর নিয়ে এলাকা ছাড়বেন বলে।

Advertisement

বিধানসভার প্রায় প্রত্যেক অধিবেশনে কোনও না কোনও কারণে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিজেপি পরিষদীয় দলের সঙ্ঘাত তৈরি হচ্ছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু-সহ বিজেপি বিধায়কেরা দফায় দফায় অধিবেশন থেকে সাসপেন্ডও হচ্ছেন। চলতি বছরের বাজেট অধিবেশন চলাকালীন সেই সঙ্ঘাত তুঙ্গে ওঠে। শুভেন্দু ঘোষণা করেন, স্পিকার বিধানসভায় কী করছেন, তা স্পিকারের নিজের নির্বাচনী এলাকায় গিয়েই বলে আসা হবে। সেই লক্ষ্যেই ১৯ মার্চ বারুইপুর রাসমাঠ থেকে এসপি অফিস পর্যন্ত মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শুভেন্দু-সহ অন্য বিজেপি বিধায়কেরা সেখানে পৌঁছোনোর আগেই এলাকায় তৃণমূল জমায়েত করে। ফলে শুভেন্দুরা পৌঁছতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে শুরু করে। শুভেন্দু অভিযোগ করেন যে, তাঁর গাড়িতে হামলাও হয়েছে। মিছিল না-করেই সে দিন বারুইপুর থেকে কলকাতা ফিরে আসেন শুভেন্দু। তবে কলকাতা হাই কোর্টের রায় নিয়ে ফের বারুইপুরে জনসভা করবেন বলে সে দিনই তিনি ঘোষণা করেছিলেন। পরে হাই কোর্ট বারুইপুরে শুভেন্দুদের সভার অনুমতি দেয়। এবং তার ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার এসপি অফিসের অদূরে মঞ্চ বেঁধে বিজেপি জনসভার আয়োজন করে।

১৯ তারিখ যখন মিছিল না-করে ফিরতে হয়েছিল, তখনও শুভেন্দুর নিশানায় ছিলেন বারুইপুর পুলিশ জেলার এসপি। বৃহস্পতিবারও তিনিই নিশানায়। আরও চড়া স্বরে। সভামঞ্চ থেকে শুভেন্দু বলেন, ‘‘দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলায় আইনের শাসন বলে কিছু নেই৷ এর জন্য প্রধানত দায়ী আইপিএস আধিকারিকেরা৷’’ লোকসভা ভোটে ওই জেলায় ‘হিংসা’ এবং ‘কারচুপি’র অভিযোগ বৃহস্পতিবার ফের শোনা গিয়েছে শুভেন্দুর মুখে। তাঁর কথায়, ‘‘গুন্ডাদের পোলিং এজেন্ট করে রাখা হয়েছিল। যাঁরা প্রতিবাদ করেছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করে মারধর করা হয়েছিল।’’ সে প্রসঙ্গেই শুভেন্দুর অভিযোগ, বারুইপুরের পুলিশ সুপার তৃণমূলের হয়ে কাজ করছেন। ১৯ মার্চের প্রসঙ্গ টেনে পুলিশ সুপারের উদ্দেশে বিরোধী দলনেতার মন্তব্য, ‘‘সে দিনের হামলার ঘটনায় আমরা হাইকোর্টে গিয়েছি৷ পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকে করিয়েছে৷’’ পুলিশকে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, ‘‘বেতন জনগনের টাকায় হয় ৷ পলাশ ঢালিরা ইতিহাস হয়ে যাবেন। প্রতি মাসে এসে সভা করব৷ আপনাদের পাশে থাকব।’’

Advertisement

স্পিকার বিমানকেও বারুইপুরের সভায় দাঁড়িয়ে আক্রমণ করেন শুভেন্দু। বিমানের ‘ইন্ধনে’ ১৯ মার্চ তাঁর উপরে হামলা হয়েছিল বলে শুভেন্দুর অভিযোগ। পুরো ‘পরিকল্পনা’র নেপথ্যে ‘ভাইপো’ ছিলেন বলেও তাঁর দাবি। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তাঁর মন্তব্য, ‘‘সংখ্যার অহঙ্কার দেখাবেন না৷ অনেকেই জেলে গিয়েছে৷ আরও অনেকে লাইনে আছে৷ অনেকে আবার জেল থেকে বেরিয়ে এসে অন্য রকম হয়ে গিয়েছে৷ যেমন অনুব্রত একটু ভদ্র হয়েছে৷ বালু আড়ালে থেকে খেলছে৷’’

সভা শেষ করেই শুভেন্দু বারুইপুর ছাড়েননি। যে রাস্তা ধরে ১৯ মার্চ তাঁর মিছিল হতে পারেনি, বৃহস্পতিবার সেই রাস্তায় সদলবদলে শুভেন্দু হাঁটা শুরু করেন। তিনি জানান, কর্মীরা বাড়ির ফেরার পরে তিনি ফিরবেন। তাই দলের জেলা কার্যালয়ে যাচ্ছেন। ১৯ মার্চ তাঁর হাঁটার কথা ছিল রাসমাঠ থেকে এসপি অফিস পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার তিনি হাঁটলেন এসপি অফিস থেকে রাসমাঠ হয়ে জেলা কার্যালয় পর্যন্ত। আগের দিন ওই পথে মিছিল করতে না পারার শোধ নিলেন কি? শুভেন্দুর ইঙ্গিতপূর্ণ জবাব, ‘‘যে যেমন ভাবে প্রশ্ন করবেন, তাকে সে ভাবেই উত্তর দিতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement