জ্যোতি, রাজীবও পারেননি: শুভেন্দু

বিজেপি এখানে সভা করে লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের কাজ অনেক সহজ করে দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:২১
Share:

পাশে-আছি: কাঁথিতে তৃণমূলের সভায় শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।

বিজেপি এখানে সভা করে লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের কাজ অনেক সহজ করে দিয়েছে।

Advertisement

রবিবার, কাঁথি রেল স্টেশন লাগোয়া মাঠে বিজেপির পাল্টা তৃণমূলের সভায় এ ভাবেই বিজেপিকে কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা রাজ্যের পরিবহণ ও পরিবেশ দফতরের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।

গত ২৯ জানুয়ারি কাঁথি রেল স্টেশন লাগোয়া মাঠে সভা করেছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। সেই সভার অনুমতি দেওয়া নিয়ে প্রশাসনের টালবাহানা নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল বিজেপি। সভার দিনই মালদহ থেকে শুভেন্দুবাবু ঘোষণা করেন, ‘‘৩ ফেব্রুয়ারি ওই একই মাঠে তিনি সভা করে আরও বেশি লোক নিয়ে আসবেন।’’ সেইমতই এ দিন ওই মাঠে সভার আয়োজন করা হয়েছিল। এ দিন বিজেপির সভার ভিড় নিয়ে শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘‘ওরা বাইরের রাজ্য ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং পাশের জেলা হাওড়া থেকে লোক এনেছিল। সর্বভারতীয় সভাপতিকে এনে কাঁথিতে সভা করে ভেবেছিল ভোটে ফায়দা তুলবে। কিন্তু আমরা এখানে ৭০ সাল থেকে জিতছি। ১৯৯০-৯৫’ সালে পুর ভোটের প্রচারে জ্যোতি বসুকে এনেও সিপিএম জিততে পারেনি। এমনকী ৮৭’ সালেও প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধীকে এনে সভা করেও কংগ্রেস কাঁথিতে জিততে পারেনি।’’ এ দিন সভা থেকেই তিনি ঘোষণা করেন, ‘‘২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে কাঁথি কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী প্রায় ২ লক্ষ ৩০ হাজার ভোটে জিতেছিলেন। আর সামনের লোকসভা নির্বাচনে কাঁথি কেন্দ্রের প্রার্থীকে যদি আড়াই লক্ষেরও বেশি মার্জিনে জেতাতে না পারি, তা হলে রাজনীতি ছেড়ে দেব।’’

Advertisement

এ দিন শুভেন্দুবাবুর বক্তব্যের বেশিরভাগ জুড়ে ছিল বিজেপির বিরোধিতা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা খড়্গপুরের বিধায়ক দিলীপ ঘোষের বক্তব্যের জের টেনে মন্ত্রী বলেন , “২৯ তারিখ এই মাঠে দাঁড়িয়েই বিজেপির রাজ্য সভাপতি ঘোষণা করেছিলেন, কাঁথি থেকে ‘অধিকারী অ্যান্ড সন্স’ কোম্পানিকে উপড়ে ফেলবেন। কিন্তু তিনি বোধহয় জানেন না, তাঁর জন্মের আগে থেকেই কাঁথিতে অধিকারীরা রাজনীতি করছে।’’

তাঁর কটাক্ষ, ‘‘খড়গপুর বিধানসভার বিধায়ক দিলীপ ঘোষ কাঁথিতে শনিপুজোর উদ্বোধনেও ডাক পান না। কিন্তু তাঁর এলাকার দশেরায় রাবণ পোড়ায় উদ্বোধন করেন শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপির সেই সব ছিন্নমূল নেতারা কাঁথিতে সভা করে তৃণমূলকে আদতে আরও মজবুত ও শক্তিশালী করে গিয়েছেন।’’

সভায় বামেদেরও সমালোচনা করেন পরিবহণ মন্ত্রী। তিনি বলেন, “কাঁথি বিধানসভার উপনির্বাচন সহ বেশ কয়েকটি নির্বাচনে দেখেছি, বামেদের ভোট এখন গেরুয়া শিবিরে চলে যাচ্ছে। তাই বামেরা যাতে ব্রিগেড ফ্রিগেড না করে, তাদের সাইন বোর্ড রক্ষার কাজ করে এবং ধর্মনিরপেক্ষতার লড়াই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ে তার জন্য অনুরোধ করব। তা ছাড়া এটা বিধানসভার নির্বাচন নয়। এ লড়াই ভারতবর্ষকে বাঁচানোর লড়াই। পশ্চিমবঙ্গের নেতাদের কথা শুনে বামেদের সর্বভারতীয় নেতারা মমতাদির ব্রিগেডে আসেনি। তাই আগে সিপিএম ঠিক করুক, বিজেপিকে লোকসভা ভোটে সরাবেন, কি সরাবে না।’’

যদিও পাল্টা পরিবহণমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বিজেপির জেলা সভাপতি তপন মাইতি বলেন, “যেখানেই তৃণমূল বিজেপির পাল্টা হিসাবে সভা করবে সেখানেই সভা ফ্লপ করবে। কাঁথির সভাও ফ্লপ হয়েছে। উনি মুখে বলছেন আমাদের কোনও গুরুত্ব নেই। অথচ সেই আমাদের নিয়েই অনেক বেশি কথা খরচ করছেন। এতেই বোঝা যাচ্ছে অমিত শাহের সভার পর ওঁরা ভয় পেয়েছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement