ফাইল চিত্র
দু’মাসেরও বেশি চলছে লকডাউন। তার উপর ঘূর্ণিঝড় আমপানের তাণ্ডবে চরম ক্ষতির মুখে কৃষকেরা। এই সঙ্কট সামাল দিতে সমবায় ব্যঙ্কের মাধ্যমে কৃষিঋণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা দুই মেদিনীপুরের তিনটি সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান শুভেন্দু অধিকারী। জেলার সমবায় ব্যাঙ্কগুলির ঋণ গ্রহীতাদের ছ’মাসের ‘মোরাটোরিয়াম’ বা কিস্তি স্থগিত রাখারও ঘোষণা করেছেন শুভেন্দু।
রবিবার কাঁথির বাড়ি থেকেই ‘বিদ্যাসাগর সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক’, ‘কন্টাই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক’ এবং ‘কন্টাই কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন ব্যাঙ্কে’র আধিকারিকদের সঙ্গে একটি ভিডিয়ো বৈঠক করেন শুভেন্দু। সেখানেই তিনি একগুচ্ছ ঘোষণা করেছেন। শুভেন্দু জানান, এই সমবায় ব্যাঙ্কগুলি থেকে যে সব কৃষক, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী ও পরিবহণ ব্যবসায়ীরা ঋণ নিয়েছেন, তাঁদের জন্য তিন মাসের কিস্তি স্থগিতের ঘোষণা আগেই করা হয়েছিল। সেই ছাড়ের মেয়াদ বাড়িয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ মোট ৬ মাস বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে অতিরিক্ত ৬টি কিস্তিতে বাড়তি ‘ফি’ ছাড়াই ঋণগ্রহীতারা টাকা শোধ করতে পারবেন।
সরকারের ঘোষণার বাইরে এ বার সমবায় ব্যাঙ্কগুলি থেকে ৫৫০ কোটি টাকার কৃষিঋণ দেওয়া হবে বলেও জানান শুভেন্দু। কৃষকদের পাশাপাশি উদ্যানপালন ও প্রাণিসম্পদ বিকাশের সঙ্গে যুক্ত মানুষরাও এই ঋণের সুবিধা পাবেন। শুভেন্দু জানান, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে পানের বরজের জন্য যাঁরা ঋণ নিয়েছিলেন, আমফানে ক্ষতির জন্য সদস্য কল্যাণ তহবিল থেকে কন্টাই কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন ব্যাঙ্ক প্রত্যেককে ১০ হাজার এবং তমলুক কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন ব্যাঙ্ক প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে অর্থ সাহায্য দেবে। এ ছাড়াও কন্টাই কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন ব্যাঙ্ক নতুন পানের বরজের জন্য ঋণ দিতে ১২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। সমবায়ের মাধ্যমে কৃষকদের বিমা চালু করার কথাও এ দিন ঘোষণা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ প্রিমিয়াম ঋণগ্রহীতা এবং বাকি ৫০ শতাংশ সংশ্লিষ্ট সমবায় ব্যাঙ্ক দেবে। প্রবীণ নাগরিকদের জন্য ১ শতাংশ বাড়তি সুদও এই তিনটি সমবায় ব্যাঙ্ক দেবে বলে জানান শুভেন্দু।
দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলায় ব্লক পিছু ১ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে প্রাতিষ্ঠানিক নিভৃতবাস (কোয়রান্টিন) কেন্দ্রগুলির জন্য। শুভেন্দু বলেন, ‘‘সঙ্কটে জয়ের প্রত্যয় নিয়েই এই মানবিক পদক্ষেপ।’’