তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘জনসংযোগ যাত্রা’ এখন শুভেন্দু অধিকারীর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে ঢুকেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সেই যাত্রাকে ঘিরে বিপুল পুলিশি বন্দোবস্ত নিয়ে ফের প্রশ্ন তুললেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর মন্তব্য, এক জন সাংসদের পিছনে এক দিনে ২২৪৫ জন পুলিশ মোতায়েন থাকছে, এমন ঘটনা রাষ্ট্রপ্রধানদের ক্ষেত্রেও ঘটে না! তৃণমূলের তরফে অবশ্য পাল্টা কটাক্ষ করা হয়েছে, ‘জনসংযোগ যাত্রা’য় মানুষের ভিড় দেখে মাথা খারাপ হয়েছে বিরোধী দলনেতার। তাই এমন আক্রমণ করছে। মানুষের বিপুল ভিড় সামলাতে পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে, এমন যুক্তিই দেওয়া হচ্ছে শাসক দলের তরফে।
প্রথমে সমাজমাধ্যমে এবং পরে সংবাদমাধ্যমের সামনে বুধবার অভিষেকের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন শুভেন্দু। তাঁর বক্তব্য, একটা দলের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে এত পুলিশ মোতায়েন ও অন্যান্য নিরাপত্তার বন্দোবস্তের জন্য ভাড়া মেটানো হচ্ছে কি না, জানতে চেয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে চিঠি দিয়েছিলেন তিনি। চিঠির উত্তর আসেনি তবে তাঁর দাবি, সাধারণ ভাবে হিসেব করে দেখা গিয়েছে দিনে এক কোটি টাকা খরচ হচ্ছে বিভিন্ন সরকারি দফতরের মিলিত বন্দোবস্তের পিছনে। শুভেন্দু বলেছেন, ‘‘কত জন আইপিএস তাঁকে (অভিষেক) সেলাম করলেন বা কত জন দড়ি ধরে দাঁড়িয়ে থাকলেন, তা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। বিরোধী দলনেতা হিসেবে প্রশ্ন এটাই যে, রাজ্যে পরপর এতগুলো বিস্ফোরণ ঘটল, ব্যারাকপুরে দুষ্কৃতীদের গুলিতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। অথচ এই যাত্রা ঘিরে প্রতিটা আইজি জ়োনে সব পুলিশ ওখানেই মোতায়েন হয়ে যাচ্ছে। অদ্ভুত বাড়াবাড়ি চলছে!’’
অভিষেক জ়েড প্লাস ক্যাটিগরির নিরাপত্তা পান। তার কিছু কড়াকড়ি তো থাকবেই। শুভেন্দুর বক্তব্য, ‘‘এই জ়েড প্লাস মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অনুমোদিত নয়। তাতেও আমাদের আপত্তি নেই। নিরাপত্তা বিধির ‘ব্লু বুকে’ যা আছে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা হোক না। কিন্তু এখানে সব কিছু ছাড়িয়ে যাচ্ছে।’’ এই সংক্রান্ত যে জনস্বার্থের মামলা চলছে, তাতে পূর্ব মেদিনীপুরে বিপুল নিরাপত্তার আয়োজনের বিষয়টিও যুক্ত করা হবে বলে বিরোধী দলনেতা জানিয়েছেন। এই সংক্রান্ত প্রশ্নে এ দিন কলকাতায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও বলেছেন, ‘‘নাগরিকের নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলার কোনও বালাই নেই। গোটা পুলিশ ব্যবস্থা, সিভিক পুলিশ সব একটা যাত্রা সফল করতে ব্যস্ত!’’
রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য পাল্টা বলেছেন, ‘‘জনসংযোগ যাত্রা দেখে মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে! যে ভাবে মানুষ ভিড় করছেন, তা দেখে এই সব কুৎসা করে মুখরক্ষা করতে চাইছেন।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘অভিষেকের যাত্রায় সর্বত্র বিশাল সংখ্যায় মানুষ আসছেন। এত মানুষ যেখানে জড়ো হয়ে যান, সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে বাড়তি সর্তকতা নিতেই হয়। এর মধ্যে আশ্চর্যের কী আছে!’’