হাজির: তমলুক আদালতে দিবাকর জানা। রবিবার। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের এক আধিকারিক ও নিরাপত্তারক্ষীদের মারধরে অভিযুক্ত তিনি। দু’দিন তাঁর নাগাল পায়নি পুলিশ। কোলাঘাটের সেই দাপুটে তৃণমূল নেতা দিবাকর জানা শেষ পর্যন্ত রবিবার আত্মসমর্পণ করলেন।
ইতিমধ্যেই দল কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আইএনটিটিইউসি নেতা দিবাকরকে সাসপেন্ড করেছে। এ দিন আত্মসমর্পণের মুহূর্তে অবশ্য দলের প্রতি, শুভেন্দু অধিকারীর প্রতি আস্থাই জানিয়েছেন দিবাকর। পুলিশের গাড়িতে উঠতে উঠতে বলে গিয়েছেন, ‘‘এই জেলায় মাননীয় শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশে দীর্ঘ সময় মানুষকে সেবা দিয়েছি। ওঁর প্রতি এখনও আমার দৃঢ় আস্থা আছে। আমাকে দল সাসপেন্ড করলেও পিছন থেকে আমি তৃণমূলকে শক্তিশালী করে রাখব। কোনও একটি ঘটনার সঙ্গে দুর্ভাগ্যক্রমে জড়িয়ে গিয়েছি। আমি এখনও মনে করি আমার নেতা শুভেন্দু অধিকারী।’’
তবে এ দিন বরাবরের দাপুটে মেজাজে দিবাকরকে দেখা যায়নি। উল্টে চোখে-মুখে ছিল উদ্বেগ। তৃণমূলের অন্দরে জল্পনা, দল থেকে সাসপেন্ড হয়ে যাওয়ায় আপাতত কোণঠাসা দিবাকর। রাজনৈতিক ভবিষ্যতের কথা ভেবেই তাঁর এ দিনের শুভেন্দু-স্তুতি। এ বিষয়ে তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘দলের প্রতি আস্থা থাকলে ভাল। দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি ওঁর বিষয়টি নজরে রাখছে।’’
আরও পড়ুন: দিবাকরের আত্মসমর্পণে জল্পনা
রবিবার সকাল সাড়ে ১১টা। এক অনুগামীর গাড়িতে কোলাঘাট থানায় পৌঁছন দিবাকর। পরনে হলুদ পাঞ্জাবি আর জিনস্। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী, বড় মেয়ে এবং দুই অনুগামী। পুলিশের তরফে আগেই দিবাকরের লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক থানায় জমার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কারণ, বৃহস্পতিবারই দিবাকরের বন্দুকের লাইসেন্স বাতিল করে জেলা প্রশাসন। এ দিন থানায় এসে দিবাকর প্রথমেই তাঁর বন্দুক জমা দেন। তার পরে তাঁকে গ্রেফতার করে কোলাঘাট থানার পুলিশ। সরকারি কাজে বাধা, সরকারি আধিকারিককে আক্রমণ, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট-সহ ১১টি ধারায় মামলা রুজু হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এফআইআরে অভিযুক্ত তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে একেবারে প্রথমে।
এ দিন তমলুক আদালতে অবশ্য দিবাকরের সঙ্গে তাঁর কোনও আইনজীবীকে দেখা যায়নি। ভারপ্রাপ্ত সিজেএম অর্ঘ্য আচার্য তাঁকে ১২ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি ফের দিবাকরকে আদালতে আনা হবে। সরকারি আইনজীবী সফিউল আলি খান বলেন, ‘‘উনি সোমবার আইনজীবী মারফত জামিনের আবেদন জানাবেন বলে আদালতে জানিয়েছেন।’’