ডেঙ্গি লেখা বারণ! ফেসবুক পোস্টে সাসপেন্ড সেই চিকিৎসকের ভবিষ্যৎ কী? ‘জানেন না’ কেউ

প্রশ্ন তুলেছেন দু’বছর সাসপেন্ড হয়ে থাকা প্রবীণ চিকিৎসক অরুণাচল দত্তচৌধুরী।

Advertisement

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:০৩
Share:

অরুণাচল দত্তচৌধুরী

চাকরি থেকে অবসরের আগে কি তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হওয়া সরকারি তদন্ত শেষ হবে? আদৌ কি জানতে পারবেন তিনি অপরাধী কি না? নাকি সাসপেন্ড হয়ে থাকতে থাকতেই তাঁর কর্মজীবন শেষ হয়ে যাবে?

Advertisement

প্রশ্ন তুলেছেন দু’বছর সাসপেন্ড হয়ে থাকা প্রবীণ চিকিৎসক অরুণাচল দত্তচৌধুরী। মাসখানেক আগেও স্বাস্থ্য দফতরকে চিঠি দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হওয়া তদন্তের গতিপ্রকৃতি এবং ফলাফল জানতে চেয়েছিলেন। তাঁর দাবি, কোনও জবাব এ বারও আসেনি। একাধিক স্বাস্থ্যকর্তার কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তাঁরা কেউই অরুণাচলবাবুর তদন্ত সংক্রান্ত ফাইলের হদিস দিতে পারেননি।

২০১৭-র ৬ অক্টোবর। সরকারি চিকিৎসক অরুণাচলবাবু সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছিলেন— ‘এ রাজ্যে ডেঙ্গি হওয়া বারণ... ভীত কেন্নোর মতো সন্ত্রস্ত এই আমি অভাগার ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ লিখছি— ফিভার উইথ থ্রম্বোসাইটোপিনিয়া!’ ১১ অক্টোবর স্বাস্থ্য দফতর তাঁকে সাসপেন্ড করে। তদন্ত শুরু হয়। দু’বছর কাটতে চললেও সেই তদন্ত শেষ হয়েছে কি না, কারও জানা নেই।

Advertisement

অরুণাচলবাবুর দাবি, ‘‘আমার কারও প্রতি ক্ষোভ নেই, কিন্তু কোন দোষে অপরাধী হলাম সেটা জানার অধিকার আছে মনে হয়। শেষ বার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বাস্থ্যভবনে ডাকা হয় ২০১৮ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি। তার পর বলা হয়, আর আসতে হবে না। তদন্ত রিপোর্টের কপি পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তার পর সব চুপ। আমি চিঠির পর চিঠি দিয়ে যাচ্ছি। চিকিৎসক শ্যামাপদ গড়াইয়ের মতো অবস্থা হতে চলেছে আমার।’’ ২০১১ সাল থেকে সাসপেন্ড থাকা অবস্থাতেই চলতি বছর অবসর নিয়েছেন শ্যামাপদবাবু। আগামী বছর মে মাসে অবসর নেওয়ার কথা অরুণাচলবাবুরও।

রাজ্যের স্বাস্থ্য-অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এই বিষয়টি আমি দেখছি না। স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেখছেন।’’ স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য বললেন, ‘‘আমার তো ওই ফাইল দেখার কথা নয়। আমি শুধু জানি, চিকিৎসক শ্যামাপদ গড়াই হাইকোর্টে মামলা করেছেন। সেই বিষয়টি চূড়ান্ত পর্বে রয়েছে।’’ সরকারি চিকিৎসকদের অন্যতম সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স’-এর তরফে মানস গুমটা জানিয়েছেন, গত দু’বছরে স্বাস্থ্যভবনে জমা দেওয়া সব স্মারকলিপিতে তাঁরা অরুণাচলবাবুর প্রসঙ্গ তুলেছেন।

শেষ বার স্বাস্থ্যসচিব তাঁদের জানিয়েছিলেন, ফাইলটি নবান্নে রয়েছে। নবান্নে খোঁজ নেওয়া হলে মুখ্যসচিবের অফিস থেকে জানানো হয়েছে, এই সংক্রান্ত ফাইল নবান্নে নয়, স্বাস্থ্যসচিবের কাছেই থাকার কথা। স্বাস্থ্য দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ বলেন, ‘‘কিছু অগ্রগতি হয়েছে এই কেসে। এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না। ফাইল আমারকাছে নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement