টানটানা উত্তেজনা ছিল সব শিবিরেই। প্রশ্ন ছিল কে হবেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক? বৃহস্পতিবার ডেবরার সম্মেলনে জেলা সম্পাদক হলেন প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ।
রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রর উদ্যোগ রুখে দিতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সিপিএমের সম্পাদক হলেন সুশান্ত ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
টানটানা উত্তেজনা ছিল সব শিবিরেই। প্রশ্ন ছিল কে হবেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক? বৃহস্পতিবার ডেবরার সম্মেলনে জেলা সম্পাদক হলেন প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ।
এ বারের সম্মেলনে জেলা সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে ছিলেন মোট তিনজন। প্রাক্তন জেলা সম্পাদক দীপক সরকার ও তাঁর শিবির আগে থেকেই খোলাখুলি সমর্থন জানিয়েছিল সুশান্তকে। আর রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ও বিদায়ী জেলা সম্পাদক তরুণ রায় জেলা সম্পাদক পদে চেয়েছিলেন ডিওয়াইএফআই-এর প্রাক্তন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তাপস সিংহকে। আর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকে রাজ্য কমিটির এক সদস্য এই দৌড়ে সামিল করে তদ্বির করেছিলেন ঘাটালের সিপিএম নেতা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক সাঁতরার নাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাপস-অশোককে পিছনে ফেলে জেলা সম্পাদক হলে সুশান্ত।
সূত্রের খবর, জেলা সম্পাদক পদে প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্তকে চায়নি আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। তা ছাড়া একই জেলার নেতা হলেও, বরাবর সুশান্ত-দীপকদের দাপটে কোণঠাসাই থেকেছেন সূর্যকান্ত। তাই রাজ্য সম্পাদক স্বয়ং সুশান্তকে এই পদে চাননি। তাই গোড়া থেকেই তাঁকে আটকাতে কলকাতার মুজফ্ফর আহমেদ ভবন থেকেই উদ্যোগী হয়েছিলেন রাজ্য সম্পাদক। তাই এই লড়াইয়ে অশোকের থেকে সুশান্তর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তাপস। সেই তাপসকেই রাজনীতির দাবার চালে হারিয়ে জেলা সম্পাদক পদে বসলেন সুশান্ত।
এর পরে সুশান্ত বলেন, ‘‘দলের নিয়ম নীতি মেনে দল পরিচালনা করা হবে।’’ ১৯৮৮ থেকে জেলা কমিটিতে রয়েছেন সুশান্ত। অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার হলদিয়ায় সেইবার হয়েছিল জেলা সম্মেলন। ১৯৯৬ থেকে ২০১১ পর্যন্ত মন্ত্রী ছিলেন তিনি।
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের অন্দরমহলের রাজনীতির সমীকরণে, এই লড়াইয়ে তাপসের হয়ে যেমন রাজ্য সম্পাদক স্বয়ং চেষ্টা শুরু করেছিলেন। তেমনই কলকাতা থেকে সিপিএম নেতা রবীন দেব সাহায্য করেছিলেন সুশান্তকে। তাঁর মোক্ষম চালেই পরাস্ত হলেন রাজ্য সম্পাদক। বেনাচাপড়া কঙ্কাল কাণ্ডে হাজতবাস হয়েছিল সুশান্তর। পরে জেল থেকে বেরিয়ে একটি সংবাদমাধ্যমে কলাম লেখার জন্য পার্টি থেকে বহিষ্কৃত হন তিনি। রাজ্য সম্পাদকের উদ্যোগকে হারিয়ে সেই সুশান্তর জেলা সম্পাদক হওয়া তাঁর রাজনৈতিক পুনরুত্থান হিসেবেই দেখছে রাজ্য রাজনীতির কারবারিরা।