ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় সরকারের আধিপত্যবাদী মনোভাবের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষোভকে সমর্থন জানাল সিপিএম। তবে সেই সঙ্গেই তৃণমূল নেত্রীর রাজনৈতিক দ্বিচারিতা নিয়েও প্রশ্ন তুলল তারা।
একের পর এক কেন্দ্রীয় প্রকল্পে নরেন্দ্র মোদীর সরকার আর্থিক বরাদ্দ কমিয়ে দিচ্ছে, বারবার বলা সত্ত্বেও রাজ্যের আর্থিক দায় লাঘব করার জন্য কোনও সাহায্য করছে না— এই রকম নানা অভিযোগ তুলে শনিবার কেন্দ্রকে কড়া আক্রমণ করেছিলেন মমতা। সরাসরি বিঁধেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদীকেও। তার প্রেক্ষিতেই রবিবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, কেন্দ্রের আধিপত্য চালানোর মনোভাবের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভের সঙ্গে তাঁরাও একমত। কেন্দ্রীয় সরকারের এই ধরনের মানসিকতার বিরুদ্ধে তাঁরাও আগে প্রতিবাদ করেছেন। কিন্তু সেই সময় রাজ্যের বিরোধী নেত্রী মমতাকে পাশে পাওয়া যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন সূর্যবাবু।
সূর্যবাবু টুইট করেছেন, ‘‘বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী দীর্ঘ দিন কেন্দ্রীয় সরকারেও মন্ত্রী ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো নিয়ে তাঁর উদ্বেগ তখন কোথায় ছিল? বামফ্রন্ট সরকার থাকাকালীন আমরা আবেদন করেছিলাম, বিরোধীরাও রাজ্যের দাবি আদায়ের জন্য একসঙ্গে দিল্লিতে দরবার করতে চলুন। তিনি যে তখন সেই আর্জি এক কথায় উড়িয়ে দিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী কি তা ভুলে গিয়েছেন?’’ এই সপ্তাহেই বিধানসভার অধিবেশন বসবে। সেখানে কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনতে চায় সরকার পক্ষ। কেন্দ্রের ভূমিকার বিরুদ্ধে সরব হওয়ার যৌক্তিকতা মেনেও রাজ্য সরকারের মনোভাব নিয়ে বিধানসভার মধ্যে প্রশ্ন তুলতে চান বাম বিধায়কেরা।
বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান অবশ্য মনে করেন, বিজেপি-র সঙ্গে গোপন বোঝাপড়া রেখেই তৃণমূল নেত্রী আক্রমণাত্মক হচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘মোদী ও দিদির মধ্যে গড়াপেটা খেলা হচ্ছে!’’ আবার তাঁরই দলের বর্ষীয়ান বিধায়ক মানস ভুঁইয়া বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস-মুক্ত ভারত গড়ার নামে মোদী-অমিত শাহেরা ইতিহাস বিকৃত করছেন, যোজনা কমিশন তুলে দিয়েছেন, বরাদ্দ ছেঁটে দিচ্ছেন। এর বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী আগ্রাসী অবস্থান নিয়েছেন। এই প্রশ্নে আমাদের সমর্থনই করা উচিত।’’
রাজ্যে এসে কেন্দ্রীয় বিমান প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত সিংহ অবশ্য এ দিনই দাবি করেছেন, কেন্দ্র আলোচনার ভিত্তিতে সকলকে নিয়েই চলতে চায়। বিজেপি সাংসদ মীণাক্ষি লেখি মন্তব্য করেছেন, ‘‘উনি আগে রাজ্যকে ভাল ভাবে চালানোর কাজটা শিখুন! কেন্দ্র কেন্দ্রের কাজই করছে।’’ আর দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর পদটাকেই মুখ্যমন্ত্রী তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছেন। এটা হতাশা ছাড়া কিছু নয়!’’