প্রতীকী ছবি।
অ্যান্টিবায়োটিক থেকে বিভিন্ন ওষুধ প্রতিরোধের মুখে পড়তে থাকায় নানান রোগের রমরমা। ম্যালেরিয়ার ওষুধও কি তা হলে প্রতিরোধের শিকার? ‘ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেল্থ সার্ভে’ বা জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষার পঞ্চম ধাপে এর উত্তর পেতে চাইছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
দেশের বিভিন্ন রাজ্যের স্বাস্থ্যসূচক কেমন, তা জানতে সম্প্রতি এই সমীক্ষা শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, ওড়িশা, মহারাষ্ট্র ও রাজস্থানে এই সমীক্ষার দায়িত্ব পেয়েছে ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব হেল্থ ম্যানেজমেন্ট রিসার্চ’ বা আইআইএইচএমআর। কাল, বুধবার মহারাষ্ট্র, ত্রিপুরার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গে সমীক্ষার কাজ শেষ হচ্ছে। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে ওই প্রতিষ্ঠানের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর অরিন্দম দাস বলেন, ‘‘ম্যালেরিয়ার ওষুধ প্রতিরোধের মুখে পড়েছে কি না, তা দেখতে এই প্রথম সমীক্ষা হচ্ছে। সমীক্ষা চলাকালীন রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পুণের ন্যাশনাল এড্স রিসার্চ ইনস্টিটিউটে পাঠিয়ে দিয়েছি।’’
আইআইএইচএমআরের প্রেসিডেন্ট পঙ্কজ গুপ্ত জানান, রাজ্যে ১৬,৮০০টি পরিবারের সঙ্গে কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে ১৫ বছরের উপরে প্রত্যেকের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৩৯ লক্ষ কি জলেই, প্রশ্ন পরিবেশকর্মীদের
ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত স্বাস্থ্য ভবনের এক আধিকারিক জানান, রাজ্যে ম্যালেরিয়ার ওষুধ প্রতিরোধের কোনও তথ্য নেই। বরং ম্যালেরিয়ায় সংক্রমণ কমছে। তবে রক্তের নমুনা সংগ্রহ প্রাথমিক ধাপ। ম্যালেরিয়ার ওষুধ প্রতিরোধ হচ্ছে কি না, তা জানার প্রক্রিয়াটি জটিল বলে জানাচ্ছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার জানান, ভাইভ্যাক্স নাকি ফ্যালসিপেরাম, কোন গোত্রের ম্যালেরিয়ার জন্য রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, তা দেখতে হবে। সাধারণত ফ্যালসিপেরামের ক্ষেত্রেই এই ধরনের গবেষণা প্রাধান্য পায়। আক্রান্ত ব্যক্তি ওষুধ খাওয়ার এক বা দেড় মাস পরেও তাঁর রক্তের নমুনায় জীবাণু মিললে কিছু প্রমাণ হয় না। হতে পারে, নতুন করে জীবাণুর শিকার হয়েছেন তিনি। নইলে বুঝতে হবে, ওষুধ কাজ করেনি। সে-ক্ষেত্রেও ওষুধ শরীরে ঠিকমতো পৌঁছেছিল কি না, সেটা দেখা দরকার। দেখতে হবে, যে-দু’টি ওষুধের মিশ্রণ দেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে কোনটি কাজ করছে না। ‘‘পুরো প্রক্রিয়াটি সহজ নয়। এত কিছু দেখার পরেও ব্যক্তিভেদে ফ্যালসিপেরামের চরিত্র অনুযায়ী অন্য রকম ফলাফল হতে পারে,’’ বলছেন অরুণাংশুবাবু।