নিজস্ব চিত্র।
এক নাবালিকার মৃত্যুই হুঁশ ফেরাল সিউড়ি পুরসভার। এ বার রীতিমতো নির্দেশিকা জারি করে বিপজ্জনক বাড়ি চিহ্নিত করার কাজও শুরু করে দিল তারা।
গত কয়েক দিন আগেই সিউড়ির টিন বাজারে জরাজীর্ণ বাড়ির একাংশ ভেঙে মৃত্যু হয় এক ছাত্রীর। এই ঘটনার পরই স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। পুরসভা এলাকার পুরনো এবং ভগ্নপ্রায় বাড়িগুলো ভেঙে ফেলার দাবি ওঠে। প্রশ্ন ওঠে পুরসভার উদাসীন মনোভাব নিয়েও। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বার বার এ বিষয়ে জানানো হয়েছে পুরসভাকে। কিন্তু কোনও পদক্ষেপই করেনি তারা। ছাত্রীর মৃত্যুর পর থেকে বিষয়টি নিয়ে ক্রমাগত চাপ বাড়তে থাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুরনো বাড়িগুলোকে চিহ্নিত করার সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা।
শুক্রবার এক নির্দেশিকা জারি করে পুরসভা জানিয়েছে, পুরনো এবং ভগ্নপ্রায় বাড়িগুলোকে চিহ্নিত করা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটির সদস্যরা পুর এলাকায় ঘুরে বিপজ্জনক বাড়িগুলোকে চিহ্নিত করবেন। যে বাড়িগুলো বিপজ্জনক মনে হবে ইঞ্জিনিয়ারদের, সেই বাড়ির মালিকদের নোটিস পাঠানো হবে। সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে পুরসভা। নির্দিষ্ট সময়ে ওই সব বাড়ির মালিকরা কোনও ব্যবস্থা না নিলে, পুরসভাই সেই বাড়িগুলোকে ভেঙে ফেলবে বলে জানানো হয়েছে। তার সমস্ত খরচ বহন করতে হবে সেই বাড়ির মালিককেই। ইতিমধ্যেই সিউড়ি শহরে ২৪টি বাড়িকে ভগ্নপ্রায় বলে চিহ্নিত করেছে পুরসভা।
আরও পড়ুন: পুলিশি জুলুমের অভিযোগে অবরোধ বারাসতের চাঁপাডালি মোড়, যানজট জাতীয় সড়কে
শুধু ভগ্নপ্রায় বা বিপজ্জনক বাড়ি চিহ্নিতকরণই নয়, দুর্ঘটনা এড়াতে সিউড়ি শহরে রাস্তা দখল করে ফুটপাতের উপর যাঁরা ব্যবসা করছেন বা দোকানের জিনিসপত্র রাখছেন, মাইকিং করে তাঁদেরও সতর্ক করা হয়েছে। পাশাপাশি বলা হয়েছে, ফুটপাতের উপর কোনও ব্যবসা করা যাবে না। এই নির্দেশ অমান্য করলে সব মালপত্র বাজেয়াপ্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুরসভার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন সিউড়ির বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসীন্দা টিঙ্কু সাউ বলেন, “এই সিদ্ধান্ত আরও অনেক আগেই নেওয়া উচিত ছিল। তা হলে প্রাণ যেত না ওই খুদে পড়ুয়ার।” আর এক বাসিন্দা বিজয় বিশ্বাস বলেন, “দেরিতে হলেও হুঁশ ফিরল পুরসভার।” অন্য দিকে, পুরপ্রশাসক কাজি ফিরোজউদ্দিন বলেন, “আমরা কড়া ভাবেই এ বার পথে নেমেছি। আমাদের নির্দেশিকা না মানলে আরও কড়া ব্যবস্থা নেব।”