—প্রতীকী ছবি।
সাধ ছিল জেলে বসেই তিনি লুকিয়ে-চুরিয়ে মোবাইলে কথা বলবেন। সূত্রের খবর, আদালতে শুনানির সময়ে তাই লোকচক্ষুর আড়ালে এক আত্মীয় তাঁকে ছোট মোবাইল ফোন দিয়েছিলেন।
আদালত থেকে ফিরে জেলে ঢোকার সময়ে গেটে বেজে ওঠে মেটাল ডিটেক্টর। স্ত্রীকে হত্যার মামলায় বিচারাধীন ওই বন্দি আসলাম শেখের শরীর তল্লাশি করে কিছু খুঁজে পাওয়া যায়নি। অথচ মেটাল ডিটেক্টর জানাচ্ছে তাঁর সঙ্গে ধাতব কিছু রয়েছে। শেষে চেপে ধরতে আসলাম জানান, লুকিয়ে মলদ্বারের ভিতরে তিনি মোবাইল নিয়ে এসেছেন।
রবিবার দুপুরে এই কাণ্ডের পরে বহু চেষ্টা করেও যখন সেই মোবাইল বার করা যায়নি, তখন বাধ্য হয়ে বিকেলে তাঁকে ভর্তি করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালের কার্জ়ন ওয়ার্ডে। আর সন্ধ্যায় অস্ত্রোপচার করে বার করা হয় সেই মোবাইল।
বেশ কয়েক বছর আগেও কলকাতা বিমানবন্দর দিয়ে এ ভাবে সোনা পাচার করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন অনেকেই। মূলত কন্ডোমের ভিতরে সোনার বিস্কুট ভরে তা মলদ্বার দিয়ে ঢুকিয়ে দেওয়া হত। বহু ক্ষেত্রেই শরীর তল্লাশির সময়ে তা ধরা পড়ত না। কিন্তু, যাত্রীর হাঁটাচলা দেখে বুঝে যেতেন শুল্ক অফিসারেরা। বিদেশ থেকে উড়ানে কলকাতায় আসা যাত্রীদের মেটাল ডিটেক্টর ডোরের ভিতর দিয়ে যেতে হয় না। সেখানে যাত্রীর অস্বাভাবিক গতিবিধির উপরেই ভরসা রাখতে হয় শুল্ক গোয়েন্দাদের।
কিন্তু, জেলের নিয়ম বেশ কড়া। জেল থেকে বেরোনো ও ঢোকার সময়ে শরীর তল্লাশির পাশাপাশি মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করা হয়।
আসলাম রয়েছেন বারুইপুর সংশোধানাগার বা জেলে। রবিবার মামলার শুনানির জন্য তাঁকে বারুইপুর আদালতে নিয়ে আসা হয়। আদালত ফের তাঁকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিলে দুপুরে জেলে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সূত্রের দাবি, এর মধ্যেই কোনও এক সময়ে তাঁর হাতে পৌঁছয় ওই মোবাইল।
জেলে প্রাথমিক নাটক শেষে আসলাম যখন স্বীকার করেন যে তাঁর মলদ্বারে মোবাইল রয়েছে, তখন জেলের চিকিৎসকেরা তাঁকে একাধিক কলা খাইয়ে সেই মোবাইল বার করার চেষ্টা করেন। কিন্তু মোবাইল বার করা যায়নি। এর পরে বারুইপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয় আসলামকে। সেখানে তাঁর এক্স-রে করা হয়। তাতে মোবাইলের উপস্থিতি ধরা পড়ে। কিন্তু সেখানেও চিকিৎসকেরা মোবাইল বার করতে পারেননি। শেষে বিকেলে আসলামকে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।