Sandeshkhali Incident

রাজ্যের মুখ্যসচিব-সহ পাঁচ কর্তাকে সংসদীয় কমিটির তলবের উপর স্থগিতাদেশ জারি করল শীর্ষ আদালত

সন্দেশখালিকাণ্ডের আবহে বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের উপর হামলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজ্যের পাঁচ প্রশাসনিক কর্তাকে ডেকে পাঠিয়েছিল লোকসভার স্বাধিকার রক্ষা কমিটি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:০৫
Share:

(বাঁ দিকে) বিপি গোপালিক, হোসেন মেহেদি রহমান, শরদকুমার দ্বিবেদী, পার্থ ঘোষ এবং রাজীব কুমার। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সন্দেশখালিকাণ্ডের আবহে বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের উপর হামলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজ্যের মুখ্যসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিক-সহ পাঁচ প্রশাসনিক কর্তাকে ডেকে পাঠিয়েছিল লোকসভার স্বাধিকার রক্ষা কমিটি (প্রিভিলেজ কমিটি)। তাতে স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।

Advertisement

সংসদীয় কমিটির তলবের বিরুদ্ধে সোমবারই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মুখ্যসচিব।সোমবার বিষয়টিতে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালা এবং মনোজ মিশ্রের বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তার পরেই স্থগিতাদেশ জারি করে শীর্ষ আদালত। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নোটিস দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মুখ্যসচিব ছাড়াও রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী, বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার হোসেন মেহেদি রহমান এবং বসিরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পার্থ ঘোষকে তলব করা হয়েছিল। ১৯ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় কমিটির সদস্যদের মুখোমুখি হতে বলা হয়েছিল তাঁদের। তার আগেই সকালে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন মুখ্যসচিব।

Advertisement

রাজ্যের পাঁচ প্রশাসনিক কর্তা সংসদীয় কমিটির তলবে সাড়া দেবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা ছিলই। শনিবার রাজীবের কাছে সংসদীয় কমিটির তলব নিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি কমিটির মুখোমুখি হবেন কি না। কিন্তু সেই প্রশ্নের কোনও উত্তর মেলেনি রাজীবের থেকে। রবিবার রাত পর্যন্ত প্রশাসনের তরফে সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে প্রশাসনিক মহলের একাংশের দাবি ছিল, পাঁচ কর্তার স্বাধিকার রক্ষা কমিটির মুখোমুখি না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

সোমবার মুখ্যসচিব শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পরেই নবান্ন সূত্রে খবর মেলে, রাজীব কমিটির তলবে সাড়া দেবেন না। সে কথা তিনি চিঠি দিয়ে লোকসভার সচিবালয়কে জানিয়েও দিয়েছেন।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব, ডিজি-সহ পাঁচ আমলা ও পুলিশকর্তাকে সংসদীয় স্বাধিকার কমিটির তলবে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ নিয়ে রাজ্যের তরফে বিবৃতিও দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের আইনজীবী সঞ্জয় বসু জানিয়েছেন, বলা হয়েছে, রাজনৈতিক উদ্দেশে এই তলব করা হয়েছিল। যে অভিযোগে মুখ্যসচিব, ডিজি-সহ আমলা ও পুলিশকর্তাদের তলব করা হয়েছিল, তার কোনও সারবত্তা নে‌ই। পাশাপাশি এ-ও বলা হয়েছে, গত ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি বসিরহাটে যা যা ঘটেছিল, তার যে সব ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে সাংসদের (সুকান্ত) ভূমিকার বিষয়টি আড়াল করা হয়েছে। সেখানে পুলিশের উর্দি ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে, মহিলা পুলিশকর্মীদের হেনস্থা করা হয়েছে, এমনকি, গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে।

গত বুধবার সন্দেশখালি যাওয়ার পথে বাধা পেয়েছিলেন সুকান্তেরা। শেষে পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধের মাঝে পড়ে সাংসদ অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রথমে তাঁকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সুকান্তের অভিযোগ ছিল, তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছে। তাতে তাঁর প্রাণ সংশয়ও হতে পারত বলে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে দেওয়া চিঠিতে দাবি করেছিলেন সুকান্ত। তার পরেই রাজ্যের পাঁচ কর্তাকে তলব করে লোকসভার স্বাধিকার রক্ষা কমিটি।

(বিধিবদ্ধ অনুমতি সংগ্রহ করে ভার্চুয়াল মাধ্যমে আদালতের এই শুনানিতে উপস্থিত ছিল আনন্দবাজার অনলাইন।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement