Supreme Court

রাজ্যে বাজি নিষেধ, বলল সুপ্রিম কোর্টও

গত ৫ নভেম্বর বাজির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েক দিনে চোরাগোপ্তা বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২০ ০৭:১৯
Share:

ফাইল চিত্র।

কোভিড পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গে বাজি পোড়ানোর উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে ‘স্পেশ্যাল লিভ পিটিশন’ দায়ের করার আর্জি জানিয়েছিলেন বাজি ব্যবসায়ীদের একাংশ। কিন্তু বুধবার সেই আর্জি খারিজ করেছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। তার ফলে কালীপুজো ও দিওয়ালিতে রাজ্যে বাজি পোড়ানো নিষিদ্ধই থাকল।

Advertisement

এ দিন বাজি ব্যবসায়ীদের আর্জির শুনানিতে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘উৎসব নিশ্চয়ই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অতিমারি পরিস্থিতিতে প্রাণ বাঁচানোর থেকে আর কোনও কিছু গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে না। বর্তমানে জীবন বিপন্ন এবং তা ঠেকাতে সমাজের সবার এগিয়ে আসা উচিত।’’ বস্তুত, কোভিড পরিস্থিতিতে বাজির ধোঁয়া থেকে বিপদের কথা বিবেচনা করেই হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া নিয়ে বাজি ব্যবসায়ীদের মধ্যেও মতপার্থক্য রয়েছে। তাই বাজি ব্যবসায়ীদের অনেকেই এই মামলার সঙ্গে যুক্ত হতে চাননি। পশ্চিমবঙ্গ বাজি শিল্প উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক শুভঙ্কর মান্না বলেন, ‘‘হাইকোর্ট চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীদের মতামতের উপরে ভিত্তি করেই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে আর্জি জানানো আইনি অধিকার। কিন্তু আমরা মনে করি, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজি ব্যবসার থেকেও মানুষের প্রাণ বাঁচানো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই মহামান্য হাইকোর্টের রায়কেই মেনে নিয়েছি।’’ তাঁর বক্তব্য, শীর্ষ আদালতও কিন্তু জনস্বাস্থ্যের গুরুত্ব বিচার করেই আর্জি খারিজ করেছে। বাজি ব্যবসায়ীদের একাংশ মেনে নিচ্ছেন, শীর্ষ আদালত যে আর্জি খারিজ করবে তা তাঁরাও আঁচ করেছিলেন। কিন্তু সংগঠনের ‘মুখ রক্ষার’ জন্য শীর্ষ আদালতে আর্জি জানান।

Advertisement

আরও পডুন: প্রথম দিনেই দূরত্ব-বিধি শিকেয়, বাড়াতে হল ট্রেন

গত ৫ নভেম্বর বাজির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েক দিনে চোরাগোপ্তা বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার সেই প্রসঙ্গে প্রশাসনকে সতর্ক করেছে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। তার পরে রাত থেকেই পুলিশি সক্রিয়তা বেড়েছে বলে খবর। কোথাও কোথাও অবশ্য পুলিশের বিরুদ্ধে ‘অতি-সক্রিয়তার’ অভিযোগ তুলছেন বাজি বিক্রেতারা। কাঁচরাপাড়ার বাজি ব্যবসায়ীদের একাংশের অভিযোগ, পুলিশ বাড়িতে ঢুকে বাজি বাজেয়াপ্ত করেছে, ধরপাকড় করেছে। ওই এলাকার কেউ কেউ আবার দোকান খুলতে দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন। পুলিশ সূত্রের খবর, কাচরাপাড়ার ওই এলাকায় লুকিয়ে বাজি বিক্রি হচ্ছিল বলে খবর মেলে। তার ভিত্তিতেই অভিযান হয়েছে। মঙ্গলবার হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, বাজি কেনাবেচা হলে ক্রেতা ও বিক্রেতা, উভয় পক্ষের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতে হবে। লালবাজারের তরফে তাই যে সব এলাকায় বেশি বাজি ফাটে সেখানে আগেভাগে সতর্ক করতে বলা হয়েছে থানাগুলিকে। এ দিন রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ কলকাতার বহুতল আবাসনগুলির সঙ্গে বৈঠক করেও হাইকোর্টের নির্দেশ এবং তা অমান্য করলে কী হতে পারে তা জানিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement