সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
রাজ্য থেকে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলা সরানো নিয়ে সিবিআইয়ের সমালোচনার মুখে পড়ল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার শীর্ষ আদালত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে মামলা অন্য রাজ্যে সরানোর আর্জি প্রত্যাহার করে নিতে বলেছে। বিচারপতি অভয় এস অকা এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, রাজ্যের সব আদালত বিরোধী হতে পারে না। তাই সিবিআইয়ের আবেদন মানহানিকর।
ভোট পরবর্তী হিংসা মামলা রাজ্যের বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিল সিবিআই। আক্রান্ত অনেকেও অন্য রাজ্যে বিচারপ্রক্রিয়া চালানোর জন্য আবেদন জানান। এ নিয়ে সব পক্ষের কাছে হলফনামা চেয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সিবিআইয়ের তরফে দাবি করা হয়েছিল যে, ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় অভিযুক্তেরা সাক্ষীদের ভয় দেখাচ্ছেন এবং নিম্ন আদালতকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। এই অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি মূল মামলাটি অন্য রাজ্যে স্থানান্তরিত করার আর্জি জানায়।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট সিবিআইয়ের অভিযোগকে ‘মানহানিকর’ বলে অভিহিত করেছে। শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, রাজ্যের সব আদালত তদন্তকারী সংস্থার বিপক্ষে চলে যেতে পারে না। নিম্ন আদালত সম্পর্কে সিবিআইয়ের অভিযোগকে মানহানিকর বলেছে দুই বিচারপতির বেঞ্চ। একই সঙ্গে সিবিআইকে মামলা সরানোর আর্জি প্রত্যাহার করে নিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের পরে রাজ্য জুড়ে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে’ খুন, ধর্ষণ এবং ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনাগুলিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। হাই কোর্টের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল রাজ্য সরকার। সুপ্রিম কোর্টে সিবিআই তদন্তের নির্দেশই বহাল রাখে। কিন্তু মামলাগুলির ভিন্রাজ্যে ট্রায়াল চেয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় সিবিআই। তদন্তকারী সংস্থাটির দাবি ছিল, পশ্চিমবঙ্গে এই মামলায় যুক্ত অফিসার, সাক্ষীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাই ভিন্রাজ্যে মামলা স্থানান্তর করা প্রয়োজন।
এই মামলায় অভিযুক্ত হিসাবে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের একাধিক নেতার নাম উঠে আসে। এই মামলায় নাম জড়ায় অনুব্রত মণ্ডলেরও। শুক্রবার এই মামলায় অনুব্রতের আইনজীবী সঞ্জীব দাস বলেন, “আমার মক্কেল আইন-আদালতকে সম্মান করেন। নিম্ন আদালতের সম্মানহানি হয়, এমন কোনও কাজ তিনি কখনও করেননি।”