উইকিপিডিয়াকে নির্যাতিতার নাম মোছার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আরজি করের ঘটনা সম্পর্কে গুগ্লে ‘সার্চ’ করলে উইকিপিডিয়ার পাতায় দেখা যাচ্ছে নির্যাতিতার নাম! যা নিয়ে মঙ্গলবার উদ্বেগপ্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ স্পষ্ট নির্দেশ দেয়, অবিলম্বে উইকিপিডিয়াকে নির্যাতিতার নাম মুছতে হবে।
আরজি করের মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পর থেকেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্যে। প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছে সর্বত্র। বিচারের দাবিতে পথে নেমেছেন বহু মানুষ। শুধু রাজ্যের মধ্যেই এই আন্দোলন সীমাবদ্ধ নেই। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে তার আঁচ। ঘটনার পর থেকেই বিভিন্ন জায়গায় নির্যাতিতার নাম এবং ছবি ব্যবহার করতেও দেখা গিয়েছিল। একটা সময়ে সমাজমাধ্যমের পাতা ভরে গিয়েছিল নির্যাতিতার নাম এবং ছবিতে। যা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টও উদ্বেগপ্রকাশ করেছিল।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশের পরই সমাজমাধ্যমের পাতা থেকে নির্যাতিতার নাম এবং ছবি সরতে শুরু করে। এ বিষয়ে পুলিশও পদক্ষেপ করেছিল। কিন্তু এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময়ও উইকিপিডিয়ার পাতায় নির্যাতিতার নাম দেখা যাচ্ছে। মঙ্গলবারের শুনানিতে সেই বিষয়টি উত্থাপিত হলে অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। শুনানিতে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ উইকিপিডিয়াকে নির্যাতিতার নাম মোছার নির্দেশ দেয়।
আরজি কর মামলার শুনানিতে এর আগেও নির্যাতিতার নাম এবং ছবি প্রকাশ্যে আনা নিয়ে সমালোচনা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানিয়েছিল, কোনও ভাবেই নির্যাতিতার নাম এবং ছবি ব্যবহার করা যাবে না। কেউ যাতে নাম-পরিচয় প্রকাশ না করেন, তা নিশ্চিত করার নির্দেশও দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, ‘‘সমাজমাধ্যমে বা সংবাদমাধ্যমে মৃতার পরিচয় প্রকাশ্যে এনে ভুল করা হয়েছে। তা মুছে ফেলতে হবে।’’
উল্লেখ্য, ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের ঘটনায় নির্যাতিতার নাম-পরিচয় ব্যবহার না করার ব্যাপারে ভারতীয় আইনে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) ৭২ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের ঘটনায় কেউ যদি নির্যাতিতার নাম-পরিচয় প্রকাশ করেন, তবে তাঁকে দোষী হিসাবে গণ্য করা হবে। এ বিষয়ে ভারতীয় আইনে শাস্তির কথাও উল্লেখ আছে। আইনানুযায়ী, দোষীর আর্থিক জরিমানা এবং কারাবাসের সাজা হতে পারে।