ফাইল চিত্র।
মুকুল রায়, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অর্জুন সিংহের মতো বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গে ‘মিথ্যে মামলা’-র অভিযোগ নিয়ে রাজ্য সরকারের বক্তব্য জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের দ্বারস্থ হওয়া পাঁচ বিজেপি নেতাকে আপাতত রাজ্য পুলিশ গ্রেফতার করতে পারবে না বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। একই সঙ্গে বিজেপির মুখপাত্র কবীর শঙ্কর বসুর উপরে হামলার অভিযোগে সুপ্রিম কোর্ট তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ-এর থেকে ঘটনার রিপোর্ট চেয়েছে।
মুকুল, কৈলাস, অর্জুন, পবন সিংহ, সৌরভ সিংহ— এই পাঁচ বিজেপি নেতার মূল দাবি ছিল, তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলার তদন্তে স্থগিতাদেশ জারি হোক। না-হলে সিবিআইয়ের মতো স্বাধীন সংস্থার হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়া হোক। অথবা মামলার শুনানি রাজ্যের বাইরে সরানো হোক।
আজ সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি সঞ্জয় কিষেণ কউলের বেঞ্চ পাঁচ বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত ‘দমনমূলক পদক্ষেপ’ করা যাবে না বলে জানানোর পরে এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন মুকুল রায়। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির বক্তব্য, তিনি ও অর্জুন তৃণমূল ছাড়ার পরেই তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দায়ের করা শুরু হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে ৫৫টির বেশি মামলা দায়ের হয়েছে। অর্জুনের বিরুদ্ধে প্রায় ৬৫টি।
আরও পড়ুন: জাতি শংসাপত্র দিতে দল গড়ে পরিচয় যাচাই
শীর্ষ আদালতে অর্জুনের হয়ে আইনজীবী মুকুল রোহতগি একই অভিযোগ তোলেন। বিচারপতি কউল জানতে চান, ‘‘আপনি বলছেন, ৬৪টি মামলা দায়ের হয়েছে। এ সব কবেকার মামলা?’’ রোহতগি বলেন, ‘‘সেটাই আসল বিষয়। এ সবই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া পরে, ২০১৯-এ। বিজেপিতে যোগ দেওয়াটা অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’ কৈলাসের আইনজীবী প্রশান্ত কুমার বলেন, বিধানসভা ভোটের আগে কৈলাস যাতে রাজ্যে যেতে না পারেন, সে কারণেই মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর আগে ভারতী ঘোষ তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলার অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সে বিষয়েও চূড়ান্ত ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট ভারতীকে গ্রেফতার করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে। রোহতগি সেই উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, কোনও নির্বাচন এলেই এমন হয়।
আরও পড়ুন: শীতঘুম ভাঙল মনে হচ্ছে, জিতেন্দ্রকে জবাবি চিঠি ফিরহাদের
কবীরের আইনজীবী মহেশ জেঠমলানী বলেন, বিজেপি মুখপাত্রকে এমন এক মামলায় ফাঁসানো হয়েছে, যেখানে তিনি হাজিরই ছিলেন না। তাঁর উপরে হামলা হয়। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ জওয়ানেরা তাঁদের দায়িত্ব পালন করেন। সিসি ক্যামেরা ফুটেজ রয়েছে। ঘটনায় জড়িত তৃণমূল নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে কবীরের বিরুদ্ধেই খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের হয়েছে দাবি করে এ বিষয়ে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানান জেঠমলানী।
জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এই মামলার শুনানি হতে পারে। তার আগে রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে নিজের বক্তব্য জানাবে। নবান্ন সূত্রের বক্তব্য, বিজেপি নেতাদের আইনজীবীরা ভারতী ঘোষের মামলার নির্দেশ তুলে ধরেছেন। কিন্তু ওই মামলার এখনও চূড়ান্ত ফয়সালা হয়নি। বিমল গুরুঙ্গও একই দাবি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেখানে সুপ্রিম কোর্ট বলে দিয়েছিল, অভিযুক্ত ঠিক করতে পারে না, তার বিরুদ্ধে কোন সংস্থা তদন্ত করবে।