ফাইল চিত্র।
বাংলায়ও কি ‘মহারাষ্ট্র মডেল’ চালু করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে?
শিবসেনার বিদ্রোহী নেতা একনাথ শিন্ডেকে সামনে রেখে সম্প্রতি রাজনৈতিক পালাবদল ঘটেছে মহারাষ্ট্রে। বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ে শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনার একাংশ সেখানে নতুন সরকার গড়েছে। এ রাজ্যেও পরিবর্তনের দাবিতে চর্চায় চলে এল সেই ‘মহারাষ্ট্র মডেল’। আর সেই চর্চা শুরু হল রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কথায়।
বাংলায় সরকার বদলের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মঙ্গলবার বলেন, ‘‘পুরোটাই নির্ভর করছে এখানে কোনও একনাথ শিন্ডে তৈরি হবে কি না তার উপর। দেখা যাক, আগামিদিন ঘটনাপ্রবাহ কোন দিকে এগোয়।’’
সরকার ফেলতে বিধায়ক কেনাবেচার অভিযোগে দীর্ঘ দিন ধরেই বিজেপির দিকে আঙুল তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। একই অভিযোগ উঠেছে ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়কের গ্রেফতারের পরেও। এই অবস্থায় বিহারের রাজনীতিতে নাটকীয় পালাবদলের মধ্যে এই প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘‘কোথাও অবিজেপি সরকার থাকতে দেবে না বিজেপি। কোথাও টাকা দিয়ে, কোথাও এজেন্সি দিয়ে সরকার ভাঙার চেষ্টা চলছে। বাংলায় মমতা আছেন। মাথা কুটে ফাটিয়ে ফেললেও তা হবে না।’’
মেয়াদ শেষের আগেই এ রাজ্যে সরকার ভেঙে যাবে বলে কিছু দিন ধরে দাবি করে আসছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এ দিন ফের তিনি বলেন, ‘‘ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত এই সরকার কার্যত থাকবে না। ২০২৪ সালে একসঙ্গে ভোট হবে।’’ সেই সূত্রেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘পিসি-ভাইপো (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়) ব্যাগ গোছাও। এই রাষ্ট্রবিরোধী সরকারকে আমরা সরাবই।’’ আগেও প্রকাশ্য সভায় ঝাড়খণ্ড, রাজস্থানের পরে বাংলায় ‘পরিবর্তন’ হবে বলে একাধিকবার মন্তব্য করেছেন তিনি।
শুভেন্দুর সেই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই সুকান্তের এই ব্যাখ্যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। কেন মেয়াদ শেষের আগেই সরকার পড়ে যাওয়া বা নির্বাচনের কথা বলছেন শুভেন্দু? সতীর্থের দাবি প্রসঙ্গে সুকান্ত অবশ্য বলেন, ‘‘পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেলে আছেন। অনুব্রতকে সিবিআই খুঁজে বেড়াচ্ছে। ১৯ জন নেতা মন্ত্রীর সম্পত্তির হিসেব পেতে মহামান্য কলকাতা হাইকোর্ট ইডিকে মামলার পার্টি করেছে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই আগামী দিন অর্ধেকের বেশি মন্ত্রী জেলে থাকবেন। ফলে সরকারটা পড়ে যাবে। তখন তো নির্বাচন করতেই হবে।’’
বিজেপির এই দাবি নস্যাৎ করে সুখেন্দু বলেন, ‘‘পূর্ব ভারত কোনওদিনই দিল্লির বশ্যতা স্বীকার করেনি। হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুস্থান তত্ত্বে সায় না দেওয়ায় এই চেষ্টা আগেও হয়েছে। এখানে এ সব করে লাভ হবে না।’’