কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারকে গ্রেফতার করল পুলিশ। —ফাইল চিত্র।
অশান্তি মোকাবিলায় মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় ১৬৩ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। তার মধ্যেই বুধবার বেলডাঙা যাওয়ার পথে কৃষ্ণনগর থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তার প্রতিবাদে কলকাতা-সহ রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভে নামল বিজেপি। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস যদিও মণিপুরের হিংসার প্রসঙ্গ উস্কে দিয়ে বিজেপিকে পাল্টা খোঁচা দিয়েছে।
মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা, শক্তিপুর ও রেজিনগর থানা এলাকায় আগামী ২২ নভেম্বর পর্যন্ত ১৬৩ ধারার মেয়াদ বাড়িয়েছে প্রশাসন। সরকারের নির্দেশে আজ, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত জেলা জুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ। এর মধ্যেই এ দিন দুপুরে কলকাতা থেকে বেলডাঙার দিকে রওনা হয়েছিলেন সুকান্ত। কৃষ্ণনগরেই পুলিশ সুকান্তকে আটকালে দু’পক্ষে বচসা, ধস্তাধস্তি বাধে। প্রতিবাদে জাতীয় সড়কের উপরে বসে পড়েন সুকান্ত। এর পরে তাঁকে গ্রেফতার করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। তার প্রতিবাদে বিজেপি কর্মীরা আবার রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখান। খবর পেয়ে ধুবুলিয়া থেকে কোতোয়ালি থানায় যান বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। ব্যক্তিগত বন্ডে সুকান্ত জামিন পেলে তাঁরা এক সঙ্গে কলকাতায় ফিরেছেন।
বেলডাঙা যাওয়ার পথে বিজেপির বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শাখারভ সরকারকেও বহরমপুরের মানকরায় আটক করে পুলিশ। পরে অবশ্য পুলিশ তাঁকে পলাশিতে ছেড়ে দেয়। এর আগে বহরমপুরের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীকেও বেলডাঙার বড়ুয়াতে পুলিশ বাধা দিয়েছিল। প্রসঙ্গত, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও ১৬৩ ধারা প্রত্যাহার করে বিরোধী বিধায়কদের সংশ্লিষ্ট এলাকায় যেতে দেওয়ার জন্য মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়েছিলেন।
সুকান্তকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে দলের সাবেক রাজ্য দফতর মুরলীধর সেন লেন থেকে বেরিয়ে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ হয়ে ধর্মতলার দিকে যাওয়ার সময়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সামনে বিজেপির উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার কর্মী-সমর্থকদের পুলিশ বাধা দেয়। সেখানেই বিজেপি নেতা-কর্মীরা রাস্তায় বসে, টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানান। পুলিশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করতে গেলে দু’পক্ষে বিতণ্ডা বাধে। সুকান্ত তাঁর গ্রেফতারের ভিডিয়ো পোস্ট করে এক্স হ্যান্ড্লে বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমাদের লড়াই, সংগ্রাম জারি থাকবে।’
যদিও তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “বছর ঘুরল, এখনও মণিপুর জ্বলছে। সুকান্ত দেশের মন্ত্রী। কেন যাচ্ছেন না সেখানে? যে জায়গাটা শান্ত হয়ে এসেছে, সেখানে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করতে যাচ্ছেন। পুলিশের উচিত ওঁকে গ্রেফতার করে আদালতে না পেশ করে মণিপুরে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেওয়া!” বেলডাঙার অশান্তির ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে হরেকনগরের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁকে এ দিন বহরমপুরে মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের এজলাসে তোলা হলে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।