সুদীপের বাড়িতে ফিশফ্রাই, জলভরা সন্দেশ সহযোগে জলযোগ সারছেন কুণাল। পাশে, সুদীপ-পত্নী নয়না। —নিজস্ব চিত্র।
নবান্নে বিমান বসু-সহ বাম নেতাদের আপ্যায়নে প্লেটে ফিশফ্রাই রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ফিশফ্রাই নিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে কম আলোচনা হয়নি। আবারও এক বার ‘ফিশফ্রাই রাজনীতি’ দেখল বাংলা। সোমবার বিকেলে কুণাল ঘোষ জানিয়েছিলেন যে, সন্ধ্যায় তিনি উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে চায়ের আমন্ত্রণে যাবেন। কিন্তু দেখা গেল, শুধু চা-এ সীমাবদ্ধ রইল না। সান্ধ্য জলযোগে ছিল ফিশফ্রাই, কুকিজ়, জলভরা সন্দেশও। পাশাপাশিই, সুদীপের স্ত্রী তথা চৌরঙ্গীর তৃণমূল বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় নারকেল নাড়ুও বানিয়ে রেখেছিলেন কুণালের জন্য।
গত কয়েক দিন ধরেই সুদীপের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন কুণাল। এমনকি ইডি, সিবিআইয়ের কাছে সুদীপকে আবার গ্রেফতারেরও দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। শনিবার সুদীপকে বিঁধতে গিয়ে কুণাল বলেছিলেন, ‘‘উনি রোজ়ভ্যালির দালাল।’’ কয়েক দিন আগে ব্রিগেডের প্রস্তুতি সভায় তাঁকে না-ডাকা নিয়ে সুদীপের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানাতে শুরু করেছিলেন কুণাল। কিন্তু ক্রমে তা এমন জায়গায় যায় যে, দল তাঁকে শো-কজ় করে। সোমবারই সেই চিঠি কুণালের কাছে পৌঁছেছে। যদিও বিকেল পর্যন্ত তিনি তা প়ড়ে উঠতে পারেননি বলেই কুণালের দাবি। অন্য দিকে, কুণালের মতোই সুদীপের বিরুদ্ধে সরব হয়ে, বিবিধ কারণ দেখিয়ে বিধায়ক ও তৃণমূলের সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তাপস রায়।
সোমবার সুদীপের বাড়ি থেকে বেরিয়ে কুণাল বলেন, ‘‘যা বলেছিলাম, সে সব বাক্স আর নতুন করে খুলতে চাই না। সুদীপদার সঙ্গে একটা আলোচনা হয়েছে। উনি বলেছেন, উত্তর কলকাতায় যে সমস্যা বা কমিউনিকেশন গ্যাপ আছে, সেগুলো মিটিয়ে নেবেন।’’ দু’দিন আগে কুণাল দাবি তুলেছিলেন, উত্তর কলকাতা কেন মহিলা সাংসদ পাবে না? মন্ত্রী শশী পাঁজার নামও লোকসভা ভোটে প্রার্থী হিসাবে তুলেছিলেন কুণাল। সোমবার ফিশফ্রাই, জলভরার পর অবশ্য তা নিয়ে আর কোনও মন্তব্য করেননি তিনি। কুণাল এ-ও বলেছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাঁকেই প্রার্থী করুন, দলের সবাই মিলে তাঁকে জেতাতেই নামব। সুদীপদা এখনও সাংসদ। ধরে নিচ্ছি তিনিই প্রার্থী হবেন।’’ তবে গত কয়েক দিন সুদীপ চুপ ছিলেন। কুণালের সঙ্গে সাক্ষাতের পরেও কোনও মন্তব্য করেননি উত্তর কলকাতার সাংসদ তথা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুদীপ।