—ফাইল চিত্র।
দিন কয়েক আগে বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী দাবি করেছিলেন, ভারতের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘জন গণ মন’ গানটিকে পাল্টে দেওয়া হোক। এই খবর সামনে আসতেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে শান্তিনিকেতনে। বিশেষত সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ থেকে বুদ্ধিজীবী সকলেই। কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জেলা তৃণমূল। এমন দাবি ব্যক্তিগত বলে দায় ঝেড়েছে বিজেপিও।
কবিগুরুর নিজের হাতে তৈরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বর্তমান, প্রাক্তন পড়ুয়া থেকে অধ্যাপক, কর্মী সকলেই এক বাক্যে নিন্দা করছেন এমন প্রস্তাবের। ঠাকুর পরিবারের তরফ থেকেও এই ধরণের দাবির তীব্র বিরোধিতা করা হয়েছে। ঠাকুর পরিবারের সদস্য তথা পাঠভবনের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, “এই ঘটনা দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। অনেক ভেবেচিন্তেই এই গানকে জাতীয় সঙ্গীত নির্বাচন করা হয়েছিল। পরিবর্তে অন্য গানকে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে কল্পনাও করতে পারি না।”
বিরোধিতা করেছেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য তথা বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ছাত্রী ও অধ্যাপিকা সবুজকলি সেন। তিনি বলেন, “এই দাবি আমার কাছে আকস্মিক বা অকল্পনীয় নয়। কারণ, যিনি এ কথা বলেছেন, তিনি বিতর্কের কেন্দ্রে থাকতে ভালবাসেন। আর ‘সিন্ধু’ শব্দ নিয়ে তাঁর আপত্তি। কিন্তু ইতিহাসকে তো আর বদলানো যায় না।” রবীন্দ্রনাথের আদর্শ ‘দিবে আর নিবে মিলাবে মিলিবে’ ভাবনার সঙ্গে সুব্রহ্মণ্যমের ভাবনা আলাদা বলেই এমন বলতে পেরেছেন বলে সবুজকলিদেবীর মত।
বিশ্বভারতীর বর্তমান ছাত্র তথা এসএফআই নেতা সোমনাথ সৌ বলেন, “বিজেপির হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুস্থানের নীতি আরও একবার সামনে চলে এল। আমরা এই বাঙালি বিদ্বেষী মানসিকতাকেই ধিক্কার জানাই।” স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বও সরাসরি এর দায় নিতে রাজি নন। বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা বিশ্বভারতীর প্রাক্তন অধ্যাপক অনুপম হাজরা বলেন, “এটা ওঁর (সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর) ব্যক্তিগত বক্তব্য, দলের নয়।’’
রবিবার বোলপুরের দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে সরব হন জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর অভিযোগ, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আসছেন বিশ্বভারতীতে। অথচ তাঁরই দলের এক সাংসদ রবীন্দ্রনাথের জাতীয় সঙ্গীতকে তুলে দিতে বলছেন। এতে কি বাঙালিকে, বাংলাকে ছোট করা হচ্ছে না?’’