TMC

‘তৃণমূল নেতার পোষ্যের চিকিৎসা আমতলার সরকারি হাসপাতালে’! অভিযোগ ঘিরে শোরগোল

শুভেন্দু সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে দাবি করেন, সাতগাছিয়া বিধানসভার অন্তর্গত বিষ্ণুপুর ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি নবকুমার বেতালের বাড়ির অসুস্থ কুকুরকে মানুষের ব্যবহারের অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

আমতলা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৩:২৩
Share:

তৃণমূল নেতার পোষ্যকে নিয়ে আসা হয় অ্যাম্বুল্যান্সে। —নিজস্ব চিত্র।

সরকারি হাসপাতালে নাকি তৃণমূল নেতার পোষ্যের চিকিৎসা করানো হয়েছে। এমন অভিযোগকে কেন্দ্র করে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই আবহেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে রিপোর্ট দিয়ে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, ভুল তথ্য দিয়ে আসল ঘটনাকে বিকৃত করে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করা হচ্ছে।

Advertisement

শুভেন্দু সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে দাবি করেন, সাতগাছিয়া বিধানসভার অন্তর্গত বিষ্ণুপুর ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি নবকুমার বেতালের বাড়ির অসুস্থ কুকুরকে মানুষের ব্যবহারের অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানেই ওই পোষ্যের চিকিৎসা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা, এমনও অভিযোগ তোলেন বিরোধী দলনেতা।

নবকুমারের স্ত্রী সোমাশ্রী বেতাল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সদস্য তথা কর্মাধ্যক্ষ। অভিযোগ, নবকুমার-সোমাশ্রীর মেয়ে বাড়ির পোষ্যকে অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। হাসপাতালের বাইরে দাঁড় করানো হয় অ্যাম্বুল্যান্সটি। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা বেরিয়ে এসে অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যেই অসুস্থ কুকুরটির চিকিৎসা করেন বলে অভিযোগ। এমনকি, তৃণমূলের স্থানীয় এক পঞ্চায়েত প্রধান গোটা ঘটনাটি তদারকি করেছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো (যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) পোস্ট করেন শুভেন্দু। সেই ভিডিয়োতে দেখা যায়, অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে একটি কুকুরকে এক হাসপাতালে আনা হয়েছে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই শোরগোল পড়ে যায়। যদিও এ ব্যাপারে নবকুমারের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব সূত্রের খবর, ঘটনাটি যখন ঘটে তখন নবকুমার এবং তাঁর স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না। তাঁরা জেলা পরিষদে ছিলেন। বাড়িতে তাঁদের মেয়ে একাই ছিল। তার পোষ্য কুকুরটি বেশ কিছু দিন ধরেই অসুস্থ ছিল। সে দিন আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। মেয়েটিই বাড়ির কাছে এক বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা দেওয়া সংস্থার থেকে অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে কুকুরটিকে গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসে। তবে সেখানে কুকুরটির চিকিৎসা হয়নি বলেই দাবি।

এ বিষয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রিপোর্ট পাঠান স্বাস্থ্যসচিবকে। সেই রিপোর্টে তিনি পুরো ঘটনার কথা জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, ৯ সেপ্টেম্বর একটি বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে আসে। সেই অ্যাম্বুল্যান্সে গুরুতর অসুস্থ কোনও রোগী আছেন ভেবে হাসপাতালের মেডিক্যাল ইন-চার্জ চিকিৎসা করতে যান। কিন্তু গিয়ে দেখেন অ্যাম্বুল্যান্সে রয়েছে কুকুর। তিনি তৎক্ষণাৎ বিষয়টি বুঝতে পেরে অ্যাম্বুল্যান্স কর্মীদের জানান, ভুল করে ওই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। কোনও পশু চিকিৎসালয়ে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শও দেন। তার পরই হাসপাতাল চত্বর ছাড়ে অ্যাম্বুল্যান্সটি।

আমতলার এই ঘটনা প্রসঙ্গে শুক্রবার তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ জানান, কুকুর একটা জটিল বিষয়। পাণ্ডবদের শেষযাত্রায় কুকুর গিয়েছিল। কুকুরের নানা রূপ আছে। কিন্তু রোগী বঞ্চিত করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কি না সেটা আগে দেখা হোক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement