প্রতীকী ছবি
শুধু চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞেরাই যে উদ্বিগ্ন, তা নয়। রাজ্যে গত চার দিনে কোভিড সংক্রমণ যে-ভাবে বেড়েছে, তাতে প্রশাসনিক মহল শঙ্কিত। এর মধ্যেই, ৩ জানুয়ারি, সোমবার ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে অনুষ্ঠান করার কথা রাজ্য সরকারের। শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ওই অনুষ্ঠানে প্রথমে ছয়-সাড়ে ছয় হাজার ছাত্রছাত্রীকে আনার পরিকল্পনা থাকলেও পরিস্থিতি বিবেচনা করে সেই সংখ্যা অনেকটাই কমানো হয়েছে। তবু নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠানের আয়োজন করার বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় শিক্ষাকর্তাদের অনেকেই।
প্রশ্ন উঠছে, সংক্রমণ যেখানে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, তখন ঠিক এই সময়ে কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে এমন অনুষ্ঠান করা হচ্ছেই বা কেন? পরিস্থিতি ঠিক হলে তখনও তো করা যেত? বিশেষ করে জমায়েতে যেখানে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিত থাকার কথা বলা হচ্ছে, সেখানে তাদের ডেকে এনে বিপদে ফেলার যুক্তি কী, প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষকদেরই একাংশ।
১-৭ জানুয়ারি, সাত দিন ধরে রাজ্যে ‘ছাত্র সপ্তাহ’ পালন করার কথা। সেই কর্মসূচির অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ৩ জানুয়ারি। নেতাজি ইন্ডোরের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। শিক্ষা দফতর কলকাতা এবং ধারেকাছের জেলা থেকে সব মিলিয়ে অন্তত সাড়ে ছ’হাজার ছাত্রছাত্রীর জমায়েত করাতে চেয়েছিল। কিন্তু গত চার দিনে রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি বেশ খারাপ হয়েছে। ২৮-৩১ ডিসেম্বর দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা যথাক্রমে ৭৫২, ১০৮৯, ২১২৮ এবং ৩৪৫১। শনিবারের বর্ষশেষের উন্মাদনা সেই সংক্রমণে আরও কতটা ইন্ধন জোগাবে, সেটাও চিন্তায় রেখেছে রাজ্য প্রশাসনকে। এই অবস্থায় সব মিলিয়ে চার হাজার ছাত্রছাত্রীর জমায়েত চাইছে শিক্ষা দফতর।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে, হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ পরগনা— প্রতিটি জেলা থেকে অন্তত এক হাজার এবং কলকাতার কমবেশি ৭০০ ছাত্রছাত্রীকে অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে বলা হয়েছে। কলকাতার এই ৭০০ জন পড়ুয়া ইতিমধ্যে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড পেয়েছে। তবে পড়ুয়াদের সঙ্গে অভিভাবকেরা অনুষ্ঠানে থাকবেন না। শিক্ষক-শিক্ষিকারা থাকবেন। শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, “যারা মঞ্চের আশেপাশে থাকবে, করোনা পরীক্ষা করে তবেই তাদের অনুষ্ঠানে ঢুকতে দেওয়া হবে। সেই কোভিড পরীক্ষা করাবে শিক্ষা দফতরই।
অক্ষরে অক্ষরে কোভিড বিধি মেনেই পুরো অনুষ্ঠান হবে ইন্ডোরে।”
শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ওই দিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ২৪ জন ছাত্রছাত্রীকে নিজের হাতে ছাত্র-ঋণ কার্ড তুলে দেবেন। এ ছাড়া শিক্ষা সংক্রান্ত আরও কিছু ঘোষণা সে-দিন করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।