Calcutta University

Calcutta University: তালা ভেঙেই ছাত্র-বিক্ষোভ বিশ্ববিদ্যালয়ে

ক্ষণ। বিভিন্ন কলেজ থেকে আসা বিক্ষোভরত পড়ুয়ারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২১ ০৬:৪৫
Share:

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসের গেটে ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভ। শুক্রবার। —ফাইল চিত্র।

মাইগ্রেশন সার্টিফিকেট-সহ বিভিন্ন দাবিতে এবং ফল অসম্পূর্ণ রাখার মতো কিছু বিষয়ের প্রতিবাদে ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভের জেরে শুক্রবার সকাল থেকে উত্তেজনা ছড়ায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে। বিক্ষোভ-অবস্থান চলে দীর্ঘ ক্ষণ। বিভিন্ন কলেজ থেকে আসা বিক্ষোভরত পড়ুয়ারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ এলেও ছাত্রছাত্রীদের বিরুদ্ধে কোনও রকম কড়া ব্যবস্থা নিতে বারণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষই।

Advertisement

পড়ুয়ারা এ দিন সকাল থেকেই বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে প্রেসিডেন্সির দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে জড়ো হন। কয়েকশো ছাত্রছাত্রী মাইগ্রেশন সার্টিফিকেটের দাবি জানান। তার সঙ্গে ছিল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটের দাবি এবং অসম্পূর্ণ ফল ও ষষ্ঠ সিমেস্টারে একই দিনে দু'টি পরীক্ষা নেওয়ার প্রতিবাদও। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেয় মাস কয়েক আগে তৈরি পড়ুয়াদের সংগঠন ‘ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস ইউনিটি’।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই গেটে তালা লাগানো ছিল। ঢুকতে না-পেরে পড়ুয়ারা গেট ধরে ঠেলাঠেলি শুরু করায় এক সময় সেই তালা ভেঙে যায়। খোলা গেট দিয়ে ছাত্রছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ঢুকে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি সামলাতে এলে উত্তেজনা বেড়ে যায়। ছাত্রছাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, পুলিশ পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে কয়েক জন পড়ুয়ার গায়ে হাত তুলেছে। ছাত্রীদের গায়েও ধাক্কা মেরেছে কয়েক জন পুলিশ। কোনও মহিলা পুলিশকর্মী প্রথমে ঘটনাস্থলে ছিলেন না বলেও অভিযোগ।

Advertisement

দ্বারভাঙা ভবনে ঢুকে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য (শিক্ষা), রেজিস্ট্রারের দফতর বন্ধ দেখে বিক্ষোভকারীরা উঠে যান তেতলায়। সেখানে বারান্দায় বসে পড়েন তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, এর আগেও তাঁরা মাইগ্রেশন সার্টিফিকেট নিতে এসে ফিরে গিয়েছেন। তাঁদের কেউ এসেছেন সুন্দরবন থেকে, কেউ কোচবিহার থেকে। এক পড়ুয়ার বক্তব্য, গত বছর পরীক্ষা দিয়েও তাঁর ফল এখনও অসম্পূর্ণ দেখাচ্ছে। এক বছর ধরে ফল পাওয়ার জন্য দৌড়োদৌড়ি করছেন। কলেজ বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় জানে। বিশ্ববিদ্যালয় বলছে কলেজে খোঁজ নিতে। এই টানাপড়েনের মধ্যে এখন আবার পরের পরীক্ষা চলে এসেছে।

ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস ইউনিটির আহ্বায়ক অনীক দে এ দিন জানান, প্রথমে তাঁরা বন্ধ গেটের সামনেই অবস্থান শুরু করেন। কারণ, কর্তৃপক্ষের কেউই বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত না-থাকায় পড়ুয়াদের সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয় বলে দ্বাররক্ষীরা তাঁদের জানিয়ে দেন। পুলিশ আসে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা ছাত্রছাত্রীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। ধস্তাধস্তি শুরু হয়। অবস্থান তুলতে পুলিশও এগিয়ে আসে। এর পরে উত্তেজিত পড়ুয়ারা গেটের তালা ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ঢুকে পড়েন। এই সময় সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) আশিস চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করেন। তাঁর কাছে ক্যাম্পাস থেকে পুলিশ সরানোর আবেদন জানানো হয়। এর পরে ইউনিভার্সিটি কলেজ অব আর্টস অ্যান্ড কমার্স (ইউসিএসি)-এর সচিব অবস্থানরত ছাত্রছাত্রীদের সামনে উপস্থিত হয়ে তাঁদের বক্তব্য শোনেন। তার পরে বিক্ষোভকারীরা ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে যান।

রেজিস্ট্রার দেবাশিস দাস জানান, করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। মাইগ্রেশন সার্টিফিকেট যে-দিন দেওয়া হয়, নোটিস দেওয়া হয় তার আগের দিন। কর্মীরা এসে নির্দিষ্ট দিনে সার্টিফিকেট দেন। এ দিন তা দেওয়ার কথা ছিল না। তিনি বলেন, ‘‘সোম ও মঙ্গলবার আবার এই সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।" রেজিস্ট্রেশনের বিষয়ে পড়ুয়াদের অভিযোগ নিয়ে তাঁর বক্তব্য, সংশ্লিষ্ট কলেজ থেকে সব তথ্য না-আসায় বেশ কিছু পড়ুয়ার রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ হচ্ছে না।

অসম্পূর্ণ ফলের ব্যাপারে সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) আশিসবাবু এ দিন বলেন, ‘‘অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া থেকে খাতা দেখা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে নম্বর পাঠানো— সবই করছে কলেজগুলি। সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার ক্ষেত্রে কিছু ফল এখনও 'নট ফাউন্ড'। কলেজ সম্পূর্ণ ফল পাঠালেই তা প্রকাশ করা হবে।’’ ষষ্ঠ সিমেস্টারে একই দিনে দু'টি পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে কেন? ‘‘পরীক্ষার দিন বদল হলে খুবই অসুবিধা হবে। তবে কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে আলোচনা করবেন,’’ আশ্বাস দিয়েছেন সহ-উপাচার্য (শিক্ষা)।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement